রাস পূর্ণিমা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন স্থানে উৎসবের আয়োজন

জয়পুর, ৬ নভেম্বর : আজ, রাস পূর্ণিমা মহোৎসব, যা পবিত্র একটি আধ্যাত্মিক অনুষ্ঠান, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থানে গভীর আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে উদযাপিত হচ্ছে। বিশেষ করে নদীয়া জেলার নবদ্বীপ, মায়াপুর, শান্তিপুর সহ অন্যান্য স্থানগুলিতে রাস যাত্রা উৎসব আয়োজন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি কোচবিহার জেলার মাদন মোহন মন্দির, উত্তর ২৪ পরগনা জেলার শ্যাম সুন্দর মন্দির ও কাসিপুর রাজবাটিতেও অনুষ্ঠিত হচ্ছে আনন্দঘন অনুষ্ঠান।

এই দিনটি উপলক্ষে একাধিক রঙিন শোভাযাত্রা বের হয়েছে, যেখানে মন্দিরগুলো ফুলের সাজে সজ্জিত হয়েছে, যা সজ্জায় ভরপুর এবং মহাত্মক একটি পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। মেলা আয়োজনও করা হয়েছে এসব স্থানে, যা প্রচুর ভক্তদের আকর্ষণ করেছে। কোচবিহারের মাদন মোহন মন্দিরে ২১৩ বছর ধরে উদযাপিত রাস উৎসবের মেলা আজ থেকেই শুরু হয়েছে এবং চলবে ১৫ দিন।

এদিকে, রাজস্থানের জয়পুর-এ গুপ্ত বৃন্দাবন ধামে গতকাল থেকে কার্তিক মাসের রাস পূর্ণিমা মহোৎসবের উজ্জ্বল সমাপ্তি হয়েছে। এই পবিত্র দিনটি উপলক্ষে শ্রীকৃষ্ণ ও শ্রীবালরামকে সাদা কাপড় এবং ফুল দিয়ে বিশেষ সজ্জিত করা হয়। মন্দির চত্বরে দিনব্যাপী হরিনাম সংকীর্তন, দীপদান, আরতি ও ভক্তি অনুষ্ঠান হয়। গুপ্ত বৃন্দাবন ধামে পুরো কার্তিক মাসজুড়ে বিভিন্ন তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল ব্রজমণ্ডল ৮৪ কোস পরিক্রমা, বৃন্দাবন ধাম যাত্রা, রামেশ্বর ধাম যাত্রা এবং জয়পুর-এ অবস্থিত প্রাচীন মন্দিরগুলির ভক্তিময় সফর। এই সফরের উদ্দেশ্য ছিল ভক্তদের শ্রীকৃষ্ণের লীলাস্থলীর দর্শন করানো এবং সনাতন সংস্কৃতির প্রসার করা।

রাস পূর্ণিমার দিন সকালে, জয়পুর-এর প্রাচীন মন্দিরগুলির দর্শন সম্পন্ন করেন শত শত ভক্ত। তাদের মধ্যে ছিল শ্রী গোবিন্দ দেবজি, শ্রী গোপীনাথজি, শ্রী রাধা মদন মোহনজি এবং শ্রী রাধা মাধবজি (কনকঘাটী)। এদিনের বিশেষ অনুষ্ঠানে গুপ্ত বৃন্দাবন ধামে জপ সত্র, শ্রী কৃষ্ণের বই পাঠ, শৎসঙ্গ, গুরু পূজা ও সংকীর্তন আয়োজন করা হয়।

দেব দীপাবলি ও রাস পূর্ণিমার উপলক্ষে মন্দির প্রাঙ্গণে ৫১,০০০টি প্রদীপ প্রজ্বলিত করা হয়। ভক্তদের নিজ হাতে প্রদীপ জ্বালিয়ে আরতিতে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়, যার ফলে পুরো পরিবেশটি আধ্যাত্মিক শক্তি ও ভক্তিভরে ভরে উঠে। গুপ্ত বৃন্দাবন ধাম-এ আয়োজিত এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জানানো হয় যে, “ভক্তি হ’ল প্রকৃত দীপদান।” এই আয়োজনের মাধ্যমে ভক্তদের জীবনে শ্রীকৃষ্ণের সেবায় আত্মনিবেদন ও শান্তি অর্জনের বার্তা দেওয়া হয়।