কলকাতা, ২৯ অক্টোবর : পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ও কলকাতা পৌরসভা চেয়ারম্যান ফিরহাদ হাকিম বিজেপি এবং নির্বাচন কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তিনি অভিযোগ করেছেন যে, আসন্ন বিশেষ তদারকি সংশোধন প্রক্রিয়াকে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) আইন-এর সাথে যুক্ত করার একটি চক্রান্ত চলছে।
মঙ্গলবার তিনি বলেন, “যদি বিজেপি ও নির্বাচন কমিশন সিআএএ-কে একসাথে চাপিয়ে দিতে চায়, আমি তাদের পা ভেঙে দেব।” তিনি বিজেপির পক্ষ থেকে পশ্চিমবঙ্গে আয়োজিত সিআএএ ক্যাম্পগুলোর দিকে ইঙ্গিত করে এই মন্তব্য করেন। আগামী বিধানসভা নির্বাচনের আগে আরও এমন ক্যাম্প আয়োজিত হতে পারে বলে জানা যাচ্ছে।
প্রসঙ্গত, সিআএএ সংশোধন ও ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে তীব্র বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সিআএএ-র বিরুদ্ধে বিরোধীদের অভিযোগ, এটি সংখ্যালঘুদের নাগরিক অধিকার সংকুচিত করবে এবং ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়া এর সাথে যুক্ত থাকলে, বহু গরিব ও সংখ্যালঘু মানুষের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে।
এই পরিস্থিতিতে, মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা কর্তৃক ডাকা একটি সবার-দলীয় বৈঠকে উত্তেজনা তৈরি হয়। সেখানে রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ভোটার সনাক্তকরণ পদ্ধতি এবং নতুন তালিকা সংশোধন ফর্ম নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে তর্কে লিপ্ত হন।
এ বিষয়ে ফিরহাদ হাকিম জানান, “আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছি, যদি একজনও প্রকৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ে, আমরা এসআইআর-এর বিরোধিতা করব। আমরা পশ্চিমবঙ্গের একটি ভোটারেরও নাম বাদ যেতে দেব না।”
তিনি আরও বলেন, “যতদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে আছেন, ততদিন বিজেপির জন্য এনআরসি প্রয়োগ করা সম্ভব নয়।” মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই ভোটার তালিকা সংশোধন প্রক্রিয়াকে ‘পিছন থেকে এনআরসি’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
এছাড়া, তিনি পাণিহাটি, উত্তর ২৪ পরগনার ৫৭ বছর বয়সী প্রণীপ করের আত্মহত্যার প্রসঙ্গ তোলেন, যিনি এই বিতর্কিত প্রক্রিয়া নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন। ফিরহাদ হাকিম দাবি করেন, এই মৃত্যুকে বিজেপি রাজনৈতিক রূপ দিয়ে ঘটনাটি নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করছে।
পশ্চিমবঙ্গের প্রধান নির্বাচন কর্মকর্তা মনোজ আগরওয়াল এদিন সবাইকে আশ্বস্ত করেন, “কোনও প্রকৃত ভোটারের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ যাবে না। তালিকা সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ হবে।”

