নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২২ অক্টোবর:
কৃষকদের স্বার্থে এবং সীমান্তবর্তী এলাকার সমস্যাগুলির সমাধানের দাবিতে মুখ্য সচিবের নিকট দশ দফা দাবি তুলে ধরে স্মারকলিপি পাঠিয়েছিল সারা ভারত কৃষক সভা-এর ত্রিপুরা রাজ্য কমিটি। সেই দাবিপত্রের প্রেক্ষিতে গতকাল মুখ্য সচিব রাজ্য কমিটির সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন।
বুধবার রাজধানীতে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে বৈঠকের বিস্তারিত তুলে ধরেন সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্ব পবিত্র কর ও অঘোর দেববর্মা।
তারা জানান, সীমান্তবর্তী কৃষকদের নিত্যদিনের সমস্যা সমাধানে অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে সরকারের কাছে। সংগঠনের তরফে উত্থাপিত দশ দফা দাবিগুলি হল – সীমান্তবর্তী এলাকার কাঁটাতারের গেট সকাল ৬টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখতে হবে। প্রত্যেক কৃষক পরিবার ও কৃষি শ্রমিকদের জন্য জেলা শাসকের মাধ্যমে স্থায়ী পাসের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে তারা অবাধে কৃষিকাজে যাতায়াত করতে পারেন। চাষের সরঞ্জাম, গরু-মহিষ, ট্রাক্টরসহ সমস্ত কৃষিযন্ত্র কাঁটাতারের ওপারে নিয়ে যাওয়া ও ফিরিয়ে আনার সুযোগ রাখতে হবে। ধান, গমসহ মৌসুমি সব ফসল চাষ ও কাটার সুযোগ দিতে হবে, এবং গেট বন্ধ থাকার সময় ফসল পাহারার জন্য পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে। সবজি, ফুল, ফল, চা, লেবু প্রভৃতি অর্থকরী ফসল চাষের অনুমতি দিতে হবে। হাইভোল্টেজ আলোয় ফসল পোকার আক্রমণ বা পুড়ে গেলে তার পূর্ণ ক্ষতিপূরণ সরকারকে দিতে হবে। কাঁটাতারের গেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করে সীমান্তের ওপারে সেচের জন্য সোলার পাম্পের ব্যবস্থা করতে হবে।
সীমান্তের ওপারে বসবাসরত পরিবারগুলির অবাধ যাতায়াত নিশ্চিত করতে হবে; অসুস্থ ব্যক্তি, ছাত্রছাত্রী, শ্রমিক, ধর্মীয় বা সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের স্থায়ী পাস দিতে হবে যাতে প্রয়োজনে যাতায়াত করা যায়। দীর্ঘদিন ধরে কাঁটাতারের ওপারে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের নিকটবর্তী স্থানে জমি বন্দোবস্তসহ বাড়ি, পানীয় জলের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ সংযোগ ও পশুপালনের উপযোগী জমি প্রদান করতে হবে। সীমান্তবর্তী ওই পরিবারগুলিকে সরকারি চাকরিতে অগ্রাধিকার, সরকারি প্রকল্পের সুবিধা, রেগা ও টুয়েপের কাজসহ সকল প্রকার সরকারি সাহায্য দিতে হবে।
কৃষক সভার নেতৃত্ব জানিয়েছেন, মুখ্য সচিব তাদের দাবি মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং বিষয়গুলি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তবর্তী কৃষকরা নানা প্রতিবন্ধকতার মুখে কৃষিকাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের ন্যায্য দাবি মেনে না নিলে বৃহত্তর গণআন্দোলনের পথে নামবে কৃষক সভা।

