নয়াদিল্লি, ১৪ অক্টোবর: নতুন বিতর্কিত তিনটি বিল নিয়ে গঠিত সংসদের যৌথ কমিটিতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কংগ্রেস। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কংগ্রেস এই সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় সংসদীয় কর্মমন্ত্রী কিরেণ রিজিজুকে জানিয়ে দিয়েছে। কংগ্রেস জানিয়েছে, অন্যান্য বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনার পর সবাই মিলে এই কমিটিকে বয়কট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে তৃণমূল কংগ্রেস, শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) ও আম আদমি পার্টিও জানিয়েছিল যে তারা এই কমিটিতে অংশ নেবে না। সমাজবাদী পার্টিও বিরোধীদের ঐক্য রক্ষার স্বার্থে একই পথে হাঁটার ইঙ্গিত দিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত মাসে লোকসভা স্পিকার ওম বিড়লা বলেছিলেন, সংসদের যৌথ কমিটিকে বয়কট করার বিষয়ে কোনো রাজনৈতিক দল তাঁর কাছে লিখিতভাবে কিছু জানায়নি। তবে কংগ্রেস-সহ বিরোধীরা জানিয়েছে, এখন তারা আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছে।
এই তিনটি বিতর্কিত বিল — ‘গভর্নমেন্ট অফ ইউনিয়ন টেরিটোরিজ (সংশোধন) বিল’, ‘সংবিধান (১৩০তম সংশোধন) বিল’ এবং ‘জম্মু ও কাশ্মীর পুনর্গঠন (সংশোধন) বিল’ — লোকসভায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ উত্থাপন করেন মনসুন অধিবেশনের শেষ দিনে। এই বিলগুলিতে প্রস্তাব করা হয়েছে, যদি কোনো প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী বা মন্ত্রী ধারাবাহিকভাবে ৩০ দিন ধরে গুরুতর অভিযোগে গ্রেফতার হয়ে থাকেন, তবে তাঁদের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া যাবে।
বিলগুলির বিরুদ্ধে বিরোধীরা একজোট হয়ে দাবি করেছে, এগুলি সম্পূর্ণভাবে অসাংবিধানিক এবং বিরোধী রাজ্য সরকারগুলিকে লক্ষ্য করেই আনা হয়েছে। তারা বলছে, এই ধরনের আইন শাসনতান্ত্রিক মূল্যবোধের পরিপন্থী এবং কেন্দ্র সরকার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্যই এগুলি আনছে।
বিলগুলি সংসদের যৌথ কমিটির কাছে পর্যালোচনার জন্য পাঠানো হয়েছে, যেখানে লোকসভা থেকে ২১ জন এবং রাজ্যসভা থেকে ১০ জন সদস্য থাকার কথা। তবে বিরোধীদের অংশগ্রহণ ছাড়াই সেই কমিটি কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিরোধীদের এই সম্মিলিত বয়কট সরকারের ওপর চাপ বাড়াতে পারে বলেই মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে এখন সবার নজর সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।

