কর্নাটক কংগ্রেসের দুই নেতার আরএসএস-তালেবান তুলনা, বিতর্কে জড়ালো রাজ্য রাজনীতি

বেঙ্গালুরু, ১৩ অক্টোবর : কর্নাটকের কংগ্রেসের এমএলসি যথিন্দ্র সিদ্দারামাইয়া এবং মন্ত্রী প্রিয়াংক খারগে সম্প্রতি আরএসএস ও তালেবানের মধ্যে সমান্তরাল টানিয়েছেন, উভয় সংগঠনের মতাদর্শ ও আচরণে মিল পাওয়া যাচ্ছে বলে উল্লেখ করেছেন।

যথিন্দ্র সিদ্দারামাইয়া বলেন, “আরএসএসের মনোভাব তালেবানের মতো, যারা ইসলাম ধর্মে একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি চাপিয়ে দেয়, তেমনি আরএসএসও হিন্দুধর্মকে একক ব্যাখ্যায় সীমাবদ্ধ করতে চায়।” তিনি আরও বলেন, “ধর্মে তারা একটি মাত্র দৃষ্টিভঙ্গি চায়। ইসলাম ধর্মে যেমন একটি নির্দিষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি তারা চাপিয়ে দেয়, তেমনি আরএসএসও হিন্দুধর্মকে এক বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গিতে নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। তারা নারীদের স্বাধীনতা হ্রাস করে, আরএসএসও একই রকম আচরণ করে।”

অন্যদিকে, প্রিয়াংক খারগে বলেন, “যেকোনো ধরনের উগ্রবাদ তালেবানের সমান। তালেবান কখনো নারীদের সম্মান দেয় না, আরএসএসও দেয় না। তালেবান সংবিধানের প্রতি সম্মান দেখায় না, আরএসএসও দেখায় না। তালেবান তাদের ধর্মীয় যুদ্ধে গরীবদের ব্যবহার করে, আর এখানে আরএসএসও তাদের লক্ষ্য হাসিলে গরীবদের ব্যবহার করে।”

প্রিয়াংক খারগে কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে একটি চিঠিও লিখেছেন, যাতে তিনি সরকারি প্রতিষ্ঠান, পাবলিক প্লেগ্রাউন্ড এবং মন্দিরে আরএসএসের সব কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানান। চিঠিতে তিনি অভিযোগ করেন যে, আরএসএস শাখা ও সভার মাধ্যমে শিশু ও যুবকদের মধ্যে বিভাজনমূলক ভাবনা ছড়িয়ে দেয় যা সংবিধানের পরিপন্থী এবং জাতীয় ঐক্যের বিরোধী।

এর জবাবে কর্নাটক বিজেপি কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খারগের ২০০২ সালে বেঙ্গালুরুতে আরএসএসের একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পুরনো একটি ছবি শেয়ার করে কংগ্রেসের নিন্দা করেছে এবং তাদের দ্বিচারিতা তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। প্রিয়াংক খারগে এই দাবিকে “মিথ্যা প্রচার” বলে খণ্ডন করেছেন এবং পরিষ্কার করেছেন যে, তাঁর পিতা ওই অনুষ্ঠানে কেবল আইন শৃঙ্খলা রক্ষার জন্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, আরএসএসের সমর্থনে নয়।

অন্যদিকে, কর্নাটক বিজেপির নেতা সি টি রাবি আরএসএসের পক্ষে সুর চেয়েছেন এবং বলেছেন, “দশক ধরে আরএসএসের কার্যক্রম বন্ধ করার চেষ্টা চলছে, কিন্তু তারা সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদ সংগঠন গঠনের অনুমতি দেয়। আরএসএসের কার্যক্রম দেখলেই বোঝা যাবে যে, এটি সমাজকল্যাণের জন্য কাজ করে। সামাজিক সেবা করা কি অপরাধ?” তিনি আরও বলেছেন।

রাজ্যের রাজনৈতিক অঙ্গনে এই বিতর্ক নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে এবং দুই পক্ষই তাদের বক্তব্যে প্রবল অবস্থান নিয়েছে।