নয়াদিল্লি, ১২ অক্টোবর : ভারতের প্রায় ১০.৬ কোটি পরিবার এখন সাশ্রয়ী মূল্যে এলপিজি ব্যবহার করে রান্না করছেন এবং প্রতিদিন প্রায় ৬.৭ কোটি মানুষ গাড়ির জ্বালানী পূরণ করেন—এই তথ্য জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরি। রোববার এক্স-এ দেওয়া পোস্টে তিনি ভারতের জ্বালানি খাতের উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি তুলে ধরেন।
মন্ত্রী বলেন, ভারত এখন বিশ্বে তেল ও এলপিজির তৃতীয় বৃহত্তম ভোক্তা এবং চতুর্থ বৃহত্তম এলএনজি আমদানিকারক দেশ। তিনি বলেন, “ডিপওয়াটার এক্সপ্লোরেশন থেকে শুরু করে সবুজ হাইড্রোজেন ও বায়ো-এনার্জি পর্যন্ত—প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত একটি সুরক্ষিত, টেকসই ও আত্মনির্ভর জ্বালানির ভবিষ্যৎ গড়ে তুলছে।”
হরদীপ সিং পুরি আরও জানান, ভারতের রিফাইনিং ক্ষমতা ২১৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন প্রতি বছর থেকে বেড়ে ২৫৮ এমএমটিপিএ হয়েছে। গুজরাটের জামনগর রিফাইনারি এখন এশিয়ার বৃহত্তম এবং এটি ১০০টিরও বেশি দেশে পেট্রোলিয়াম রপ্তানি করে।
মন্ত্রী বলেন, “জ্বালানি কেবল জ্বালানিই নয়, এটি নতুন ভারতের হৃদস্পন্দন। এটি শিল্পকে শক্তি দেয়, মানুষকে সংযুক্ত করে এবং ১৪২ কোটি ভারতীয়ের স্বপ্নকে বাঁচিয়ে রাখে।”
ওপেন একরেজ লাইসেন্সিং পলিসি রাউন্ড ১০-এর অধীনে প্রায় ২.৫ লক্ষ বর্গকিমি এলাকা তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ব্যবসার সুবিধার্থে অনুসন্ধানের জন্য প্রয়োজনীয় ছাড়পত্রের সংখ্যা ৩৭ থেকে কমিয়ে ১৮ করা হয়েছে।
মন্ত্রী জানান, আপস্ট্রিম খাতে তেল অনুসন্ধান ও উৎপাদন বাড়াতে ইতোমধ্যে ১.৩ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি বিনিয়োগ হয়েছে। ২০২২ সাল থেকে এক মিলিয়ন বর্গকিমির বেশি অফশোর এলাকা পুনরায় অনুসন্ধানের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। ২০১৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত অনুসন্ধান ও উৎপাদন সংস্থাগুলি মোট ১৭২টি হাইড্রোকার্বন আবিষ্কারের রিপোর্ট দিয়েছে, যার মধ্যে ৬২টি অফশোর আবিষ্কার।
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী বিশেষভাবে উল্লেখ করেছেন আন্দামান বেসিনের ভৌগোলিক সম্ভাবনার কথা। ভারত ও বার্মা প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত এই অঞ্চলে স্ট্র্যাটিগ্রাফিক ট্র্যাপ রয়েছে, যা হাইড্রোকার্বন জমার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে। মিয়ানমার ও উত্তর সুমাত্রার পেট্রোলিয়াম সিস্টেমের কাছাকাছি অবস্থান এবং সম্প্রতি দক্ষিণ আন্দামান অফশোর ইন্দোনেশিয়াতে গ্যাস আবিষ্কারের কারণে এই অঞ্চলে বৈশ্বিক আগ্রহ বেড়েছে।
মন্ত্রী বলেন, বিশ্বের জ্বালানি খাত যখন অনিশ্চয়তার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, তখন ভারতের জ্বালানি খাত টেকসই সংস্কারের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে অগ্রসর হচ্ছে।

