সিটিভিএস অ্যান্ড আইআর ডির্পাটমেন্টে সফল অস্ত্রোপচারের পর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠেছেন তিন রোগী

আগরতলা, ১১ অক্টোবর: আগরতলা গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ অ্যান্ড জিবিপি হাসপাতালে কার্ডিও থোরাসিক অ্যান্ড ভাসকুলার সার্জারি অ্যান্ড ইন্টারভেনশনাল রেডিওলজি (সিটিভিএস অ্যান্ড আইআর রেডিওলজি) ডিপার্টমেন্টে একের পর এক সফল অস্ত্রোপচারে মাধ্যমে রোগীরা সুস্থ হয়ে উঠছেন। এদের মধ্যে আগরতলার শিবনগরের শান্তি রঞ্জন সাহা (৭০) আজ চেকআপের জন্য জিবিপি হাসপাতালে সিটিভিএস অ্যান্ড আইআর ডির্পাটমেন্টে আসেন এবং চিকিৎসকের পরার্মশ গ্রহণ করেন। অন্যদিকে জিরানীয়ার কলেজ চৌমুহনীর স্বপন কুমার দাসের (৫৮) শারীরিক জটিলতা ছিল বলে আরও উন্নত চিকিৎসা লাভের জন্য তাকে চেন্নাইয়ে অ্যাপোলো হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিল। সেখানে চিকিৎসার পর গত ৭ অক্টোবর, ২০২৫ তিনি ছাড়া পেয়েছেন। অ্যাপোলো হাসপাতালের চিকিৎসকরা সেখানে রোগীর পরিজনদের জানান যে, জিবিপি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার সঠিকভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং তাতে তারা সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। আগরতলার শিবনগরের শান্তি রঞ্জন সাহা (৭০), জিরানীয়ার কলেজ চৌমুহনীর স্বপন কুমার দাসের (৫৮) এবং বণিক্য চৌমুহনীর মাধব নমঃ (৪৩) নামে এই তিনজন রোগী জিবিপি হাসপাতালের ওপিডিতে গত জুলাই ও আগস্ট মাসে দেখানোর পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ রোগীরা এজিএমসি ও জিবিপি হাসপাতালে সিটিভিএস অ্যান্ড আইআর-এ ভর্তি হন। তাদের প্রত্যেকের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার পর গত ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ তাদের প্রত্যেকের এন্ট্রোভাসকুলার সার্জারি অপারেশন করা হয়।

দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত ধূমপান করার ফলে এই রোগীদের পায়ের ধমনী দিয়ে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীর অসহনীয় ব্যথা, হাঁটাচলা করতে না পারা এবং পচন অর্থাৎ গ্যাংগ্রিন শুরু হয়ে গিয়েছিল। সিটিভিএস ও আইআর এর চিকিৎসা শুরু হয় এবং রোগীরা বর্তমানে সম্পূর্ণ সুস্থ আছেন। তাদের এন্ড্রোভাস্কুলার সার্জারি ও ইন্টারভেনশন করা হয়। এই তিনজন রোগীর ক্ষেত্রে পেরিফেরাল ভাসকুলার এঞ্জিওপ্লাস্টি করে আধুনিক মানের পেরিফেরাল স্ট্যান্ট প্রতিস্থাপন করা হয়। এরফলে, পায়ের রক্তনালির ব্লকেজগুলো খুলে দেয়া সম্ভব হয়, এর এরপর পায়ে স্বাভাবিকভাবে আবার রক্ত চলাচল শুরু হয়। এই অপারেশন তথা চিকিৎসায় ছিলেন ডাঃ কনক নারায়ণ ভট্টাচার্য (সিটিভিএস সার্জন), ডাঃ রিমঝিম চাকমা (কার্ডিয়াক অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট), ডাঃ মণিময় দেববর্মা এবং ডাঃ সুরজিৎ পাল (ক্রিটিকাল কেয়ার), ক্যাথল্যাব টেকনিশিয়ান ছিলেন সঞ্জয় ঘোষ ও অরিজিৎ পাল, ক্যাথল্যাব নার্স হিসেবে ছিলেন প্রাণকৃষ্ণ দেব ও দেবব্রত দেবনাথ। ফিজিশিয়ান অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলেন সুদীপ্ত মণ্ডল, ওটি অ্যাসিস্ট্যান্ট ছিলেন রতন মন্ডল, জয়দীপ চক্রবর্তী ও অভিজিৎ রায, পারফিউশনিস্ট হিসেবে ছিলেন সুজন সাউ ও সৌরভ ত্রিপুরা, ওটি নার্স ছিলেন মৌসুমী দেবনাথ, অন্নবাহাদুর জমাতিয়া, সৌরভ শীল ও অর্পিতা সরকার, সি.টি.ভি. এস আইইউ কো-অর্ডিনেটর ছিলেন অভিষেক দত্ত, রিচাশ্রী সরকার ও জ্যামসন দেববর্মা। এদের প্রত্যেকের অপারেশনে কোনও ব্যক্তিগত খরচ হয়নি। এ.বি.পি.এম.জে.এ.ওয়াই প্রকল্পের অধীনে তাদের চিকিৎসা সম্পূর্ণ সরকারি খরচে করা হয়েছে। রোগীর ও আত্নীয় স্বজনরা রাজ্য সরকার এবং সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক ও চিকিৎসাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে এই সংবাদ জানানো হয়েছে।