ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট (ফেমা) মামলায় কেরালা-তামিলনাড়ু জুড়ে ইডির তল্লাশি, বিলাসবহুল গাড়ি চোরাচালান ও অবৈধ লেনদেনে বড় র‌্যাকেটের সন্ধান

নয়াদিল্লি, ৮ অক্টোবর : কোচির ইডি অফিস বুধবার ফরেন এক্সচেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট অ্যাক্ট, ১৯৯৯ (ফেমা)-এর আওতায় কেরালা ও তামিলনাড়ুর ১৭টি স্থানে একযোগে তল্লাশি চালায়। এই অভিযানটি বিলাসবহুল গাড়ির চোরাচালান ও অবৈধ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেনের সঙ্গে যুক্ত এক বড় চক্রের তদন্তের অংশ বলে জানিয়েছে সংস্থা।

প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, একটি সংঘবদ্ধ চক্র কোয়েম্বাটুর থেকে পুরো র‌্যাকেটটি পরিচালনা করছিল। তারা ল্যান্ড ক্রুজার, ডিফেন্ডার, মেসারাতি প্রভৃতি দামি গাড়ি নেপাল ও ভুটানের পথ ধরে অবৈধভাবে ভারতে এনে জাল কাগজপত্রের সাহায্যে রেজিস্ট্রেশন করাচ্ছিল। এই গাড়িগুলির নিবন্ধনের জন্য ভারতীয় সেনা, মার্কিন দূতাবাস এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ভুয়া নথি ব্যবহার করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এসব গাড়ি অরুণাচল প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশসহ কয়েকটি রাজ্যের আরটিও অফিসে ভুয়া পদ্ধতিতে রেজিস্ট্রেশন করানো হয়।

পরে এই গাড়িগুলি বাজারমূল্যের তুলনায় অত্যন্ত কম দামে বিক্রি করা হয় উচ্চ সম্পদসম্পন্ন ব্যক্তিদের কাছে, যাদের মধ্যে চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত কিছু ব্যক্তিও রয়েছেন। অনেক ক্ষেত্রেই এসব লেনদেন হুন্ডি বা হাওলা চ্যানেলের মাধ্যমে বিদেশ থেকে অর্থ স্থানান্তরের আকারে সম্পন্ন হয়েছে।

ইডি সূত্রে জানা গেছে, তল্লাশিতে ফেমা আইনের ৩, ৪ ও ৮ নম্বর ধারার আওতায় গুরুতর লঙ্ঘনের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রয়েছে অবৈধ বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন ও হাওলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অর্থপ্রদানের চিহ্ন। সংস্থা বর্তমানে গোটা মানি ট্রেল, উপকারভোগী নেটওয়ার্ক এবং বিদেশি মুদ্রার গতিবিধি নিয়ে গভীরভাবে তদন্ত করছে।

এই অভিযানে কোচি, ত্রিশূর, কোঝিকোড, মালাপ্পুরম, কোট্টায়ম এবং কোয়েম্বাটুরে মোট ১৭টি স্থানে তল্লাশি চালানো হয়েছে। এর মধ্যে চলচ্চিত্র অভিনেতা পৃথ্বীরাজ সুকুমারন, দুলকার সালমান এবং অমিত চাক্কালাকাল-এর বাড়ি ও প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। পাশাপাশি কয়েকজন গাড়ির মালিক, অটো ওয়ার্কশপ ও ব্যবসায়ীর অফিসেও অভিযান চালানো হয়েছে।

ইডি জানিয়েছে, তদন্ত চলছে এবং আগামী দিনে আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সামনে আসতে পারে।
_________