রায়পুর, ২ অক্টোবর : ছত্তিশগড়ের মাওবাদী-প্রভাবিত বস্তার অঞ্চলে ফের একবার চাঞ্চল্যকর নৃশংসতা দেখল গ্রামবাসী। বিজাপুর জেলার উসুর থানার অন্তর্গত পুজারিকাঁকর গ্রামের এক বাসিন্দাকে পুলিশে খবর দেওয়ার সন্দেহে নির্মমভাবে খুন করল মাওবাদীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নিহত ব্যক্তির নাম মাদকাম ভীমা। ১ অক্টোবর রাত প্রায় ৯টার সময় একদল সশস্ত্র মাওবাদী তাঁর বাড়িতে হানা দেয়।
প্রাথমিক তদন্ত ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বিবরণ অনুযায়ী, মাওবাদীরা ভীমার বাড়িতে জোর করে ঢুকে পড়ে, তাঁকে পুলিশের খবরদাতা বলে অভিযুক্ত করে এবং জোর করে বাইরে নিয়ে যায়। তারপর গ্রামের লোকজনের সামনেই তাঁকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে খুন করা হয়।
ঘটনার খবর পেয়ে উসুর থানার পুলিশ দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ উদ্ধার করে এবং ভারতীয় ন্যায় সংহিতা ও বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইনের অধীনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।
এক সিনিয়র পুলিশ আধিকারিক জানান, এটি এক কাপুরুষোচিত ও অমানবিক কাজ। সন্দেহের বশে নিরীহ গ্রামবাসীদের নিশানা করা মাওবাদীদের পুরনো কৌশল। আমরা ভীমার পরিবারের জন্য সুবিচার নিশ্চিত করব।
নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন। তাঁরা জানান, ভীমা একজন শান্তস্বভাব ও পরিশ্রমী মানুষ ছিলেন, যার কোনো রাজনৈতিক সংযোগ ছিল না।
এই হত্যাকাণ্ড আবারও স্পষ্ট করে দিল যে, মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে সাধারণ মানুষ কীভাবে চরম বিপদের মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। মাওবাদীদের পক্ষ থেকে ‘পুলিশে খবর দেওয়া’র অভিযোগে একের পর এক নিরীহ মানুষের উপর হামলার ঘটনা নতুন নয়, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এর পেছনে কোনো প্রমাণ থাকে না।
এই ঘটনার পর এলাকা জুড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর টহলদারি আরও জোরদার করা হয়েছে। অপরাধীদের শনাক্ত করতে তদন্ত চলছে।
মাওবাদী সহিংসতা ও পাল্টা অভিযানের মাঝে পড়ে সাধারণ নাগরিকদের প্রাণহানি ক্রমাগত বেড়ে চলেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন পরিস্থিতি রুখতে শুধু বাহিনী মোতায়েন নয়, স্থানীয় জনগণের আস্থা অর্জন ও সচেতনতা বৃদ্ধির দিকেও গুরুত্ব দিতে হবে।

