নয়াদিল্লি, ৩০ সেপ্টেম্বর: এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি) মঙ্গলবার প্রকাশিত অনুমানে জানিয়েছে, ২০২৫ (আর্থিক বর্ষ ২৬) এবং ২০২৬ (আর্থিক বর্ষ ২৭)-এ ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির হার প্রায় ৬.৫ শতাংশে স্থিত থাকতে পারে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলির বৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবি ০.১ থেকে ০.২ শতাংশ হ্রাস করেছে। এর মূল কারণ বিশ্ব অর্থনীতিতে শুল্কজনিত অস্থিরতা।
এডিবি জানিয়েছে, ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ভারতের অর্থনীতি ৭.৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পেছনে সরকারের শক্তিশালী পুঁজি ব্যয় অন্যতম কারণ, যা রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদার ঘাটতি পূরণ করেছে। শিল্পোন্নয়নেও উন্নতি হয়েছে। উৎপাদন ও নির্মাণ খাত ভালো পারফর্ম করেছে, যা খনন ও ইউটিলিটি খাতে পতনের ক্ষতিপূরণ করেছে।
ভারত ও আসিয়ান অঞ্চলের উৎপাদন পরিস্থিতি মজবুত রয়েছে। একই সঙ্গে, ভারতে সার্ভিস পিএমআই শক্তিশালী রয়ে গেছে, ভ্রমণ ও বিনোদন খাতে বাড়তি চাহিদার কারণে এটি আরও ত্বরান্বিত হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় চাল রপ্তানিকারক ভারত অনুকূল আবহাওয়া ও রেকর্ড ফসলের ফলে চালের দামে হ্রাস দেখতে পারে বলে রিপোর্টে উল্লেখ।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত উচ্চ শুল্ক এবং বর্ধিত বাণিজ্য অনিশ্চয়তা এই অঞ্চলের বৃদ্ধির গতিকে প্রভাবিত করতে পারে। খাদ্য ও জ্বালানির দাম কমায় এ বছর মুদ্রাস্ফীতি নেমে ১.৭ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। আগামী বছর খাদ্যদ্রব্যের দাম স্বাভাবিক হলে তা সামান্য বেড়ে ২.১ শতাংশে পৌঁছাবে।
এডিবি জানিয়েছে, আগস্টে ভারতের ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) মুদ্রাস্ফীতি কমে ২.০৭ শতাংশে নেমে এসেছে, যা গত বছরের ৩.৭ শতাংশের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। টানা তৃতীয় মাস খাদ্যের দামে পতন হয়েছে এবং বার্ষিক ভিত্তিতে ০.৭ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে, যার মূল কারণ সবজি, ডাল ও মসলার খরচ কমে আসা।
এডিবির প্রধান অর্থনীতিবিদ আলবার্ট পার্ক বলেছেন, “যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক ঐতিহাসিকভাবে উচ্চ মাত্রায় স্থিত হয়েছে এবং বৈশ্বিক বাণিজ্যের অনিশ্চয়তা উচ্চ পর্যায়ে রয়ে গেছে। শক্তিশালী রপ্তানি ও অভ্যন্তরীণ চাহিদার কারণে এশিয়া-প্রশান্ত অঞ্চলে প্রবৃদ্ধি বজায় থাকলেও, প্রতিকূল বৈশ্বিক পরিস্থিতির প্রভাব ভবিষ্যতের উপর পড়ছে।” তিনি আরও বলেন, “নতুন বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতিতে সরকারগুলির জন্য শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, উন্মুক্ততা এবং আঞ্চলিক একীকরণকে উৎসাহিত করা অত্যন্ত জরুরি।”

