কৈলাসহর, ২১ সেপ্টেম্বর: কৈলাসহরের টিলাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ভারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাটাতারের উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে রোহিঙ্গা এনে বহিঃরাজ্যে পাচার করছে দালালরা। এমনই এক গুরুতর অভিযোগ প্রকাশ্যে আনেন টিলাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের দুই নং ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। অথচ যারা রোহিঙ্গা এনে পাচার করছে তাদের বিরুদ্ধে ইরানি থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ কোনো ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ। উল্টো পাচারকারীরা গ্রামবাসীদের উপর অকথ্য নির্যাতন এবং প্রানঘাতি আক্রমণ করছে বলেও জানান গ্রামবাসীরা। এহেন অবস্থায় গ্রামবাসীরা ইরানি থানার পুলিশের উপর আস্থা হারিয়ে সদ্য যোগ দেওয়া কৈলাসহরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আইপিএস রাগুল এ-এর দারস্থ হয়েছেন। এব্যাপারে গ্রামবাসীরা একত্রিত হয়ে শনিবার রাতে কৈলাসহরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আইপিএস রাগুল এ-এর নিকট এক ডেপুটেশন প্রদান করেন।
ডেপুটেশন প্রদান শেষে গ্রামবাসীরা জানান যে, কৈলাসহরের টিলাবাজার গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দা জায়েদ আলী প্রতিনিয়ত ভারত বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাটাতারের উপর দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশ থেকে রোহিঙ্গা এনে নিজ বাড়িতে কিছুদিন রেখে বহিঃরাজ্যে পাচার করছে। বিগত কিছুদিন পূর্বে ইরানি থানার পুলিশ জায়েদ আলীর বাড়ি থেকে রোহিঙ্গাদের আটক করার কয়েকদিন পর ইরানি থানার পুলিশ জায়েদ আলীকেও গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে জায়েদ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়ে যায়। পরবর্তী সময়ে জায়েদ আলী সহ তার সঙ্গী সাথীরা সন্দেহবশত গ্রামবাসীদের উপর ধারালো অস্ত্র দিয়ে কয়েকবার প্রানঘাতি আক্রমণ করে।
গ্রামবাসীরা ইরানি থানায় লিখিতভাবে অভিযোগ করলেও পুলিশ মামলা নিচ্ছে না। উল্টো পুলিশের পরামর্শে জায়েদ আলী গ্রামবাসীদের বিরুদ্ধে থানায় মিথ্যা অভিযোগ জমা দেয়। দুই পক্ষ অভিযোগ করায় কারোর বিরুদ্ধেই মামলা নিচ্ছে না বলে জানায় পুলিশ। গ্রামবাসীরা দফায় দফায় ইরানি থানার পুলিশের দারস্থ হলেও পুলিশ গ্রামবাসীদের পাত্তাই দিচ্ছে না বলেও জানান গ্রামবাসীরা। অন্যদিকে প্রতিনিয়ত গ্রামবাসীদের হুমকি দিয়েই যাচ্ছে জায়েদ আলী। গ্রামবাসীরা নিরুপায় হয়ে কৈলাসহরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আইপিএস রাগুল এ-এর নিকট ডেপুটেশনে মিলিত হয়ে ন্যায় বিচারের দাবী করেছেন ।
সাম্প্রতিক কালে কৈলাসহরে ঘন ঘন রোহিঙ্গা আটক হয়েছিলো। কৈলাসহর যেন রোহিঙ্গাদের করিডোর হয়ে উঠেছে। অন্যদিকে, বিগত এক সপ্তাহ পূর্বে কৈলাসহরের মহকুমা পুলিশ আধিকারিক হিসেবে কাজে যোগ দিয়েছেন আইপিএস রাগুল এ। উনি কাজে যোগ দেওয়ার খবর পেয়ে গ্রামবাসীরা ২০ সেপ্টেম্বর শনিবার রাতে মহকুমা পুলিশ আধিকারিকের নিকট মিলিত হয়ে জায়েদ আলীর রোহিঙ্গা পাচারের খবর এবং ইরানি থানার পুলিশের ব্যাপারে বিস্তৃত ভাবে আলোচনা করেন। ডেপুটেশন শেষে মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আইপিএস রাগুল এ জানান যে, রোহিঙ্গার ব্যাপারে উনি কিছুই জানেন না। উনি নতুন এসেছেন। উনি এব্যাপারে খোঁজ খবর নেবেন এবং গ্রামবাসীদের ন্যায়বিচার পাইয়ে দেবার আশ্বাস দেন। তাছাড়া জায়েদ আলীর বিরুদ্ধে প্রমান পাওয়া গেলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলেও জানান মহকুমা পুলিশ আধিকারিক।

