এইচ-১বি ভিসা নিয়ে ট্রাম্পের সিদ্ধান্তে বিতর্ক; এলন মাস্কের অবস্থান বদল নিয়ে নতুন করে চর্চা

ওয়াশিংটন, ২১ সেপ্টেম্বর: আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন ইমিগ্রেশন সংস্কারকে ঘিরে ফের বিতর্কের ঝড় উঠেছে। এই সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বড় ধাক্কা খাবে প্রযুক্তি শিল্প, বিশেষ করে ভারতীয় এইচ-১বি ভিসাধারীরা। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প শুক্রবার ঘোষণা করেন, উচ্চ প্রযুক্তির বিদেশি কর্মীদের জন্য বার্ষিক এইচ-১বি ভিসা ফি এক লাফে বাড়িয়ে ১ লক্ষ মার্কিন ডলার করা হয়েছে।

এই ঘোষণার পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন করে সামনে এসেছে টেসলা ও স্পেসএক্স সিইও এলন মাস্কের একসময়ের বিতর্কিত মন্তব্য ও পরবর্তী অবস্থান পরিবর্তনের প্রসঙ্গ।

দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আগত মাস্ক নিজেও এই ভিসা ব্যবস্থার মাধ্যমে আমেরিকায় স্থায়ী হয়েছিলেন। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে তিনি এক্স-এ লিখেছিলেন, “আমি আমেরিকায় আছি এবং স্পেসএক্স, টেসলা ও আরও শত শত সফল সংস্থার অনেক গুরুত্বপূর্ণ মানুষ এখানে আছেন এইচ-১বি ভিসার কারণেই।”

তিনি আরও লেখেন, “একটু পেছনে ফিরে তাকান এবং নিজের মুখে ঘুষি মারুন। আমি এই ইস্যুতে যুদ্ধ ঘোষণা করব, যার তীব্রতা আপনার কল্পনাতেও আসবে না।”

কিন্তু একই দিনে মাস্ক বলেন, “এইচ-১বি ব্যবস্থা পুনর্গঠন করা জরুরি।” পরদিন তিনি আরও বলেন, “এই ভিসা প্রোগ্রাম ভেঙে পড়েছে এবং এর বড় সংস্কার দরকার।” তিনি প্রস্তাব দেন, এইচ-১বি ভিসার জন্য ন্যূনতম বেতন বাড়ানো এবং বার্ষিক রক্ষণাবেক্ষণ খরচ আরোপ করার, যাতে বিদেশি কর্মী নিয়োগের ব্যয় অভ্যন্তরীণ নিয়োগের তুলনায় বেশি হয়।

এইচ-১বি ভিসা সাধারণত প্রযুক্তি সংস্থাগুলিতে বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন কর্মীদের জন্য প্রযোজ্য, যার মধ্যে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, প্রজেক্ট ম্যানেজার, আইটি পেশাজীবীরা পড়েন। এই ভিসা তিন বছরের জন্য বৈধ, যা আরও তিন বছর পর্যন্ত নবীকরণযোগ্য।

ট্রাম্প প্রশাসনের মতে, এই পরিবর্তন “আমেরিকান কর্মীদের রক্ষা” করার লক্ষ্যে আনা হয়েছে। তবে আইনি চ্যালেঞ্জ পেরোতে পারলে, এই পদক্ষেপ বিপুল ব্যয়ের বোঝা চাপাবে ভিসা প্রার্থীদের ওপর। এখনও পর্যন্ত এই ভিসার খরচ ছিল ২১৫ ডলার।

এছাড়াও ট্রাম্প প্রশাসন একটি নতুন “গোল্ড কার্ড ভিসা” প্রোগ্রাম ঘোষণা করেছে—যার মধ্যে থাকবে ট্রাম্প গোল্ড কার্ড, ট্রাম্প প্ল্যাটিনাম কার্ড, এবং ব্যবসায়ীদের জন্য ট্রাম্প কর্পোরেট গোল্ড কার্ড। এই কার্ডগুলির মাধ্যমে ভিসাধারীদের জন্য একাধিক “বিশেষ সুবিধা” দেওয়া হবে এবং এগুলি প্রথাগত কর্মভিত্তিক ভিসাগুলির স্থলাভিষিক্ত হবে বলে জানানো হয়েছে। এর মাধ্যমে অধ্যাপক, বিজ্ঞানী, শিল্পী ও ক্রীড়াবিদদের জন্য নাগরিকত্বের পথ সহজ করা হবে বলে দাবি করেছে প্রশাসন।

এদিকে প্রযুক্তি শিল্প এবং অভিবাসন বিশেষজ্ঞরা এই পরিবর্তন নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তাঁদের মতে, এতে গ্লোবাল প্রতিভা আমেরিকার বাইরে চলে যেতে পারে এবং দেশের প্রযুক্তি খাতে দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতি হতে পারে।