নাগপুর, ১৪ সেপ্টেম্বর: ই২০ পেট্রল ইস্যুতে সমালোচনার মুখে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক মন্ত্রী নিতিন গড়করি নিজেকে নিয়ে ওঠা যাবতীয় অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে দাবি করলেন, তিনি একেবারে সততার সঙ্গে আয় করেন এবং তার “মস্তিষ্কের মূল্য মাসে ২০০ কোটি টাকা”। নাগপুরে এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে গড়করি জানান, তার কোনও অর্থের অভাব নেই এবং তিনি প্রতারণার আশ্রয় নেন না।
গত কয়েক সপ্তাহে কেন্দ্রের ইথানল-ভিত্তিক জ্বালানি নীতি, বিশেষ করে ই২০ পেট্রলের ওপর সরকারের জোর দেওয়াকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়েছে। সমালোচকদের একাংশের অভিযোগ, এই নীতির মাধ্যমে ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হচ্ছেন গড়করি ও তার পরিবার। এই পরিপ্রেক্ষিতেই গড়করি মন্তব্য করেন, “আমার মস্তিষ্কের দাম ২০০ কোটি টাকা প্রতি মাসে। আমি জানি কীভাবে সততার সঙ্গে রোজগার করতে হয়।”
তিনি আরও জানান, “আমার ছেলেদের আমি কেবল ব্যবসায়িক ধারণা দিই, আমি নিজে কোনও অসৎ উপায়ে উপার্জন করি না। আমার ছেলেরাও সৎ পথে ব্যবসা করছে। সম্প্রতি, আমার ছেলে ইরান থেকে ৮০০ কনটেইনার আপেল আমদানি করেছে এবং ভারতের ১,০০০ কনটেইনার কলা রপ্তানি করেছে ইরানে। ইরানের সঙ্গে কোনও অর্থনৈতিক লেনদেন নেই। এটি একটি রপ্তানি-আমদানি ভিত্তিক ব্যবসা।”
গড়করি জানান, তার নিজস্ব চিনির কারখানা, একটি ডিস্টিলারি এবং একটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। তবে কৃষিতে তার কোনও ব্যক্তিগত লাভের উদ্দেশ্য নেই, বরং তা “উন্নয়নের স্বার্থে”। পাশাপাশি, তিনি শহরবাসীর সুবিধার্থে স্থানীয় উদ্যোগে পা বাড়িয়েছেন বলেও দাবি করেন।
“আমি নাগপুরের সবজি বিক্রেতাদের বলেছি, তারা যেন মিলে শহরের কেন্দ্রে ফলের মল তৈরি করে। এতে করে কৃষক এবং ছোট ব্যবসায়ীরা সরাসরি ক্রেতার কাছে বিক্রি করতে পারবে। আমি ব্যক্তিগত লাভের জন্য কিছু করি না। আমার রোজগারের অভাব নেই,” — বলেন গড়করি।
ই২০ পেট্রলের বিরোধিতা প্রসঙ্গে গড়করি দাবি করেন, এটি একটি “প্রযোজিত ও রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সামাজিক মাধ্যম প্রচার”। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ই২০ পেট্রল নিরাপদ এবং এটি দেশীয় উৎপাদন বাড়ানোর পাশাপাশি পরিবেশ দূষণ কমায় ও কৃষকদের উপকৃত করে।
সরকারি মতে, ই২০ পেট্রল ব্যবহারে বিদেশি তেলের উপর নির্ভরতা কমবে, খরচ কমবে এবং এটি একটি পরিবেশবান্ধব জ্বালানি হিসাবে কাজ করবে। পাশাপাশি, ইথানল উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন হবে ভুট্টা ও আখের মতো ফসল, যা দেশের কৃষকদের আর্থিকভাবে সাহায্য করবে।
উল্লেখ্য, সমালোচকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে ইথানল উৎপাদনে খাদ্য এবং জলের নিরাপত্তা হুমকির মুখে পড়তে পারে, গাড়ির ইঞ্জিনের স্থায়িত্ব কমতে পারে এবং ভোক্তার পছন্দ সীমিত হয়ে পড়তে পারে। যদিও সরকার ও গড়করি উভয়েই এই সব আশঙ্কাকে ভিত্তিহীন বলেই উড়িয়ে দিয়েছেন।
এই বিতর্কের মাঝেই গড়করির এই মন্তব্য — “আমার মস্তিষ্কের দাম ২০০ কোটি টাকা” — নতুন করে শিরোনামে উঠে এসেছে এবং সামাজিক মাধ্যমেও এর বহুল চর্চা হচ্ছে। তবে গড়করি অনড় — তিনি তার উন্নয়নমুখী কর্মকাণ্ড ও আর্থিক স্বচ্ছতা নিয়েই আত্মবিশ্বাসী।

