সিকিমে ধসের বলি ৪, নিখোঁজ ৩; উদ্ধারকাজ জারি

গ্যাংটক, ১২ সেপ্টেম্বর: সিকিমের পশ্চিম জেলার ইয়াংথাং বিধানসভার আপার রিম্বিতে মাঝরাতে এক ভয়াবহ ভূমিধসে অন্তত ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এবং ৩ জন এখনও নিখোঁজ, বলে সরকারি সূত্রে জানা গেছে।

গ্যজিং-এর পুলিশ সুপার তশেরিং শেরপা জানান, ধসের ফলে একাধিক বাড়ি সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে যায় এবং ঘটনাস্থলেই তিনজনের মৃত্যু হয়। নিহতদের মধ্যে রয়েছেন ভীম প্রসাদ লিম্বু (৫৩), তাঁর বোন অনিতা লিম্বু (৪৬), জামাই বিমল রাই (৫০), এবং সাত বছরের নাতনি আঞ্জল রাই। উদ্ধারকারীদের মতে, ধসের সময় সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন, ফলে পালানোর কোনও সুযোগই পাননি।

রাতভর পুলিশ, সশস্ত্র সীমা বল, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় এক সাহসী উদ্ধার অভিযানে দু’জন মহিলাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে।

উদ্ধারকারীরা বন্যায় ফেঁপে ওঠা হিউম নদীর উপর গাছের গুঁড়ি দিয়ে অস্থায়ী সেতু তৈরি করে দুর্গম এলাকায় পৌঁছান। আহত দুই মহিলাকে গ্যজিং জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তাঁদের মধ্যে একজন হাসপাতালে মারা যান এবং অপরজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় রয়েছেন।

ভবন ও আবাসন এবং শ্রম দপ্তরের মন্ত্রী তথা এলাকার বিধায়ক ভীম হাং লিম্বু রাত ২টার সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার কাজ তদারকি করেন। তিনি জানান, অবিরাম বৃষ্টিপাত ও ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাঘাট উদ্ধারকাজ ব্যাহত করলেও প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগে অনেকটাই পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেছে।

মন্ত্রী বলেন, টানা বৃষ্টির কারণে পরিস্থিতি চরম কঠিন হলেও সব দপ্তর একসঙ্গে কাজ করছে। নিখোঁজদের উদ্ধার এবং দুর্গতদের ত্রাণ দেওয়ার কাজ চলছে।”

এখনও নিখোঁজ তিনজনের সন্ধানে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এলাকায় ভারী যন্ত্রপাতি মোতায়েন করা হয়েছে, তবে অনিরাপদ পার্বত্য ভূমি ও টানা বৃষ্টিপাতে অভিযান ব্যহত হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন। সরকার ভূমিধসপ্রবণ এলাকায় বসবাসকারী বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বনের আহ্বান জানিয়েছে এবং প্রয়োজনে নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতর আগাম আরও বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে, যার প্রেক্ষিতে রাজ্য সরকার সব জেলা প্রশাসনকে সর্বোচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছে। মনসুনে সিকিমে ভূমিধস সাধারণ ঘটনা হলেও, এই ধস বিশেষভাবে ভয়াবহ ছিল বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা। কারণ একটি বড় পাহাড়ি অংশ আচমকাই ধসে পড়ে, যার ফলে নিচের নদীতে আকস্মিক বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। উদ্ধারকাজ এখনও চলছে, এবং রাজ্যজুড়ে সতর্কতা জারি রয়েছে।