কাশ্মীর থেকে জম্মুতে রেলপথে প্রথম আপেল চালান, ইতিহাস গড়ল ভারতীয় রেল

শ্রীনগর, ১২ সেপ্টেম্বর: কাশ্মীরের উদ্যানপালন খাতে এক ঐতিহাসিক পালক যুক্ত হল শুক্রবার, যখন বুদগাম রেলওয়ে স্টেশন থেকে জম্মুর উদ্দেশ্যে যাত্রা করা প্রথম আপেলবাহী মালগাড়ি মাত্র ছয় ঘণ্টায় সফলভাবে গন্তব্যে পৌঁছল।

এই উন্নয়ন আপেলচাষি ও ফল ব্যবসায়ীদের মুখে হাসি ফোটাল। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়কে ভূমিধস ও আবহাওয়া-জনিত কারণে যাতায়াতে বাধা সৃষ্টি হওয়ায় বহু ট্রাক আটকে পড়ে এবং ফল পচে গিয়ে বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন ব্যবসায়ীরা।

এর প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কাশ্মীর উপত্যকা থেকে বাইরের রাজ্যগুলিতে ফল পরিবহনের জন্য মালবাহী ট্রেন পরিষেবা চালুর ঘোষণা করেন।

কাশ্মীর থেকে রেলপথে প্রথম আপেল চালান জম্মুতে পৌঁছানো কেবল একটি পরিবহন কার্যক্রম নয়, বরং এটি উপত্যকার উদ্যানপালন শিল্পের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। দীর্ঘদিন ধরেই শ্রীনগর-জম্মু জাতীয় সড়ক আবহাওয়ার কারণে বন্ধ থাকায় আপেলসহ অন্যান্য ফল সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে পারত না, ফলে ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা। এই প্রেক্ষাপটে কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব কাশ্মীর থেকে বাইরের রাজ্যগুলিতে মালবাহী ট্রেন পরিষেবা চালুর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, তা সময়োপযোগী এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রেলপথে ফল পরিবহন সময়মতো ডেলিভারি নিশ্চিত করবে, পরিবহণ খরচ কমাবে, ফল পচে যাওয়ার আশঙ্কা হ্রাস করবে এবং বাজারে প্রতিযোগিতা বাড়িয়ে দাম স্থিতিশীল রাখবে।

অন্য অনেকের ধারণার বিপরীতে, কাশ্মীরের সবচেয়ে বড় শিল্প হলো উদ্যানপালন, পর্যটনের নয়। আপেল, জাফরান, আখরোট, বাদাম, চেরি, নাশপাতি, পীচ ইত্যাদি উচ্চমূল্যের ফল উৎপাদনে কাশ্মীর শুধু ভারতের অভ্যন্তরেই নয়, আন্তর্জাতিক বাজারেও গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। এই খাত কেবল কৃষকদের আয় বাড়ায় না, বরং রপ্তানি আয়ে বড় ভূমিকা রাখে, কৃষিক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনে এবং গ্রামীণ অর্থনীতির ভিত্তি দৃঢ় করে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন এই মালবাহী ট্রেন পরিষেবা ধারাবাহিকভাবে কার্যকর থাকলে কাশ্মীরের ফল রপ্তানি আরও বৃদ্ধি পাবে এবং কৃষকরা তাঁদের পণ্যের ন্যায্য মূল্য পাবেন। এটি কাশ্মীরের অর্থনীতিতে এক নতুন গতি আনবে। তাই অনেকেই এই পদক্ষেপকে কাশ্মীরের উদ্যানপালন শিল্পের জন্য একটি **”গেম-চেঞ্জার”** হিসেবে বিবেচনা করছেন।