নয়াদিল্লি, ৮ সেপ্টেম্বর : রাজধানীতে শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী কর্মশালায় বিজেপি সংসদীয় দলের পক্ষ থেকে জিএসটি-এর পরবর্তী সাধারণ সংস্কার বিষয়ক একটি প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়েছে। এই প্রস্তাব পেশ করেন কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল। প্রস্তাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘সাহসী ও জনমুখী’ এই সংস্কারের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানানো হয় এবং দেশবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়।
কেন্দ্রীয় সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু জানিয়েছেন, আজ এই কর্মশালায় এনডিএ জোটের অন্যান্য দলের সংসদ সদস্যরাও অংশগ্রহণ করবেন। কর্মশালার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী মোদী বক্তব্য রাখবেন বলেও তিনি জানান।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, জিএসটির পরবর্তী সংস্কার পর্বে কর কাঠামো আরও সহজ করা হয়েছে এবং সাধারণ নাগরিককে এর কেন্দ্রবিন্দুতে রাখা হয়েছে। খাদ্য ও ওষুধের ওপর করের হার, ইলেকট্রনিক পণ্যের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে কমানো হয়েছে। পাশাপাশি, উল্টো শুল্ক কাঠামোর মতো বৈসঙ্গতিগুলিও সংশোধন করা হয়েছে এবং ক্ষুদ্র ব্যবসা, রপ্তানিকারক ও স্টার্টআপদের জন্য প্রক্রিয়া সরলীকরণ করা হয়েছে।
এই সংস্কারগুলিকে প্রধানমন্ত্রী মোদী সরকারের ‘নাগরিক জীবনে স্বাচ্ছন্দ্য আনার’ লক্ষ্যের প্রতিফলন হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে। এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষমতায়ন এবং আত্মনির্ভর ভারতের পথকে আরও দৃঢ় করার দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে।
প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মাসিক জিএসটি আদায়ের ধারাবাহিক বৃদ্ধি — যা বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকায় পৌঁছেছে — তা শুধু বেশি কর প্রদানকারীর ইঙ্গিত নয়, বরং ভারতীয় অর্থনীতির গতি ও স্থিতিশীলতার প্রতিফলন।
বড় ও ছোট— সব ধরনের প্রস্তুতকারক ও ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে তারা কর ছাড় ও ছাড়ের সুবিধা সরাসরি গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেন। এতে বলা হয়েছে, “প্রতিটি সাশ্রয় ও প্রতিটি ছাড় গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিয়ে আমরা প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নপূরণের পথে অগ্রসর হই এবং ব্যবসায়ী ও ক্রেতার মধ্যকার বিশ্বাস আরও দৃঢ় করি।”
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, দাম কমলে চাহিদা বাড়বে, চাহিদা বাড়লে ব্যবসার সমৃদ্ধি ঘটবে এবং ব্যবসার সমৃদ্ধিই দেশের শক্তিকে মজবুত করবে।
প্রস্তাবে আরও জানানো হয়েছে, গত আট বছরে জিএসটি করদাতার সংখ্যা ২০১৭ সালের ৬৬ লক্ষ থেকে বেড়ে বর্তমানে ১.৫ কোটিরও বেশি হয়েছে। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে বার্ষিক জিএসটি সংগ্রহ ২২ লক্ষ কোটি টাকার গণ্ডি অতিক্রম করেছে। এই সংস্কারের ফলে জিএসটি সংগ্রহে ব্যাপক বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা এই কর ব্যবস্থার কার্যকারিতা ও গ্রহণযোগ্যতা তুলে ধরে।
বিজেপি সংসদীয় দলের এই প্রস্তাব জিএসটি সংস্কারের পরবর্তী ধাপের প্রতি সমর্থন জানিয়ে এটিকে প্রধানমন্ত্রী মোদীর নেতৃত্বে ‘এক ঐতিহাসিক ও জনমুখী’ পদক্ষেপ হিসেবে প্রশংসা করেছে। আজ কর্মশালার সমাপনী অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী মোদীর বক্তব্যে আরও দিশা স্পষ্ট হবে বলে মনে করা হচ্ছে।

