কোয়েটা, ৩ সেপ্টেম্বর: পাকিস্তানের বেলুচিস্তান প্রদেশের রাজধানী কোয়েটায় বেলুচিস্তান ন্যাশনাল পার্টি -র এক জনসভায় ভয়াবহ বিস্ফোরণে অন্তত ১৪ জন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হয়েছেন। স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ‘দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউন’ এই খবর জানিয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শাহওয়ানি স্টেডিয়ামের কাছে এই বিস্ফোরণ ঘটে, ঠিক সেই সময়ে যখন বিএনপি-র প্রতিষ্ঠাতা সরদার আতাউল্লাহ মেঙ্গলের চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই বিস্ফোরণটি বিএনপি প্রধান আখতার মেঙ্গলের কনভয় লক্ষ্য করেই করা হয়েছিল। তবে মেঙ্গল অক্ষত রয়েছেন।
বেলুচিস্তানের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বখত মুহাম্মদ কাকার জানান, নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই বিএনপি-র সদস্য। কোয়েটার সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আহতরা, যাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
বিএনপি মুখপাত্র সাজিদ তারিন জানান, “আখতার মেঙ্গলের গাড়ি যাওয়ার ঠিক পরেই একটি প্রবল বিস্ফোরণ ঘটে। এতে আমাদের ১৩ জন সদস্য ঘটনাস্থলেই নিহত হন।” বিস্ফোরণের ধরন নিয়ে তদন্ত চলছে। এটি আত্মঘাতী বিস্ফোরণ না ইম্প্রোভাইজড এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ঘটনার পর কোয়েটা শহরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিস্ফোরণের পর এক্স-এ পোস্ট করে নিজের নিরাপদ থাকা নিশ্চিত করেছেন আখতার মেঙ্গল। তিনি লেখেন, “আলহামদুলিল্লাহ, আমি নিরাপদে আছি। কিন্তু আমাদের সহযোদ্ধাদের মৃত্যুতে হৃদয়ভাঙা। প্রায় ১৫ জন শহিদ হয়েছেন এবং বহুজন আহত। তাদের এই আত্মত্যাগ আমি কখনও ভুলব না। আল্লাহ তাঁদের জান্নাত দান করুন ও পরিবারকে ধৈর্য দিন। এটা আমার কাছে ঋণের মতো, যা আমি দায়িত্বের সঙ্গে বহন করব।”
বেলুচিস্তানের মুখ্যমন্ত্রী মীর সরফরাজ বুগতি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, “এটি একটি কাপুরুষোচিত হামলা, শান্তি বিঘ্নকারী শক্তিরা এই ধরনের কাজ করে। এর মাধ্যমে তারা গোটা অঞ্চলে ভয় ও অস্থিরতা সৃষ্টি করতে চায়।” মুখ্যমন্ত্রী আহতদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ পরিষেবা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন এবং দোষীদের শীঘ্রই গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন।
এই হামলার তদন্তে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং কোয়েটা জুড়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

