বাংলাদেশে উত্তেজনা : নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে নিহত ১, উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী

ঢাকা, ২ সেপ্টেম্বর : নীলফামারীর উত্তরা ইপিজেডে শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ ও ন্যায্য অধিকার নিশ্চিত করার দাবিতে চলমান শ্রমিক আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে মো. হাবিব (৩৫) নামে এক শ্রমিক নিহত হয়েছেন। নিহত হাবিব ইকু ইন্টারন্যাশনাল সংস্থার কর্মী ছিলেন। আজ মঙ্গলবার ২ সেপ্টেম্বর সকালে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।

অভিযোগ, এভার গ্রিন নামের একটি কোম্পানিতে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিক ছাঁটাই, পাওনা পরিশোধ ও অবসরোত্তর সুবিধা নিয়ে অসন্তোষের জেরে আন্দোলন চলছিল। এর মধ্যেই সোমবার রাতে আকস্মিকভাবে কোম্পানি বন্ধের ঘোষণা আসে। তাতে, শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ আরও মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ে। মঙ্গলবার সকালে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। হাজার হাজার শ্রমিক ইপিজেডের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে বিক্ষোভ শুরু করলে পুলিশের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ বাধে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাবিব ভোররাতে ডিউটি শেষ করে বাড়ি ফিরছিলেন। এ সময় সংঘর্ষের মধ্যে পড়ে তিনি গুলিবিদ্ধ হন। দ্রুত নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. তানজিরুল ইসলাম ফারহান তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসক জানান, হাবিবের বুকে আঘাতের চিহ্ন ছিল, তবে মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হতে ময়না তদন্তের রিপোর্টের অপেক্ষা করতে হবে।

বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, বছরের পর বছর কাজ করেও আমরা ন্যায্য অবসর সুবিধা পাইনি। তার ওপর হঠাৎ ছাঁটাইয়ের সিদ্ধান্ত আমাদের জীবন জীবিকা অনিশ্চিত করে তোলেছে। হাবিব নির্দোষ, তাকে এভাবে প্রাণ হারাতে হলো।

শ্রমিক সংগঠনগুলোর দাবি, এটি বিচ্ছিন্ন কোনো ঘটনা নয়। গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর আশুলিয়াতেও বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিক কাউসার হোসেন খান পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন। এক বছর পেরিয়ে গেলেও শ্রমিকদের নিরাপত্তা ও অধিকার নিয়ে সরকারের কোনো কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

সংঘর্ষের পর উত্তপ্ত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে সেনাবাহিনী। বর্তমানে ইপিজেড এলাকা সেনা ও পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে আশপাশের সব কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত প্রশাসনের উচ্চপর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।