হায়দরাবাদ, ২ সেপ্টেম্বর —সালওয়া জুডুম নিয়ে দেওয়া একটি রায়ের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ তাঁকে নকশালপন্থী আখ্যা দেওয়ায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানালেন ইন্ডিয়া ব্লকের উপ-রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী ও প্রাক্তন সুপ্রিম কোর্ট বিচারপতি সুদর্শন রেড্ডি। রেড্ডি বলেন, “এই ধরনের অভিযোগে আমি বিচলিত নই। তারা ভেবেছিল আমি ভয় পাবো। আমি তাদের সঙ্গে সংলাপে প্রস্তুত। শুধু এটুকুই বলবো, ‘রায় পড়ে তারপর বলুন’।”
হায়দরাবাদে ইন্ডিয়া ব্লকের এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুদর্শন রেড্ডি তার এনডিএ-র প্রতিদ্বন্দ্বী সি পি রাধাকৃষ্ণনের নীরবতারও সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, “আমি প্রতিদিন সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছি। ভালো বিতর্ক তখনই হবে যখন উনিও সামনে এসে বলবেন। কিন্তু তিনি চুপ। এভাবে গণতান্ত্রিক বিতর্ক সম্ভব নয়।”
রেড্ডি জানান, সংবিধান রক্ষার অঙ্গীকার থেকেই তিনি উপ-রাষ্ট্রপতি পদে লড়ছেন। হাতে সংবিধান তুলে ধরে তিনি বলেন, “৫৩ বছর ধরে আমি সংবিধান রক্ষা ও প্রতিরক্ষার কাজ করেছি। এই নির্বাচনে অংশ নেওয়া সেই দীর্ঘ সাংবিধানিক যাত্রারই এক অংশ। আমি এই যাত্রা চালিয়ে যাবো।”
তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে সংবিধান ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে দমন করার চেষ্টা চলছে, এবং এই অবস্থার বিরুদ্ধে সকলকেই সরব হওয়া উচিত।
এদিন বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ পুনঃবিবেচনা নিয়ে কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, “ভোটার তালিকা নিয়ে বিরোধী ও শাসক দলগুলির মধ্যে নয়, বরং দেশের প্রতিটি নাগরিকের মধ্যে আলোচনা হওয়া উচিত। ভোটার আইডি-তে ধর্ম, বর্ণ বা জাত উল্লেখ থাকে না। ভোটার তালিকা সংশোধন হওয়া উচিত আইনি ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া মেনে, কোনও গোষ্ঠীর ইচ্ছার উপর নির্ভর করে নয়।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দেশ সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদী নয়। ভারত বহুভাষিক, বহু-সাংস্কৃতিক, বহুধর্মীয় রাষ্ট্র। সংবিধানকে রক্ষা করতে সঠিক ও সাংবিধানিক উপায়ে প্রস্তুত ভোটার তালিকা আবশ্যক।”
অনুষ্ঠানে উপস্থিত তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী রেভন্ত রেড্ডি বলেন, “সুদর্শন রেড্ডি একজন তেলুগু প্রার্থী। তাই অন্ধ্রপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানার সমস্ত রাজনৈতিক দল তাঁর পাশে দাঁড়াক। দলীয় ভেদাভেদ ভুলে এই প্রার্থীকে সমর্থন করুন।” তিনি টিডিপি প্রধান চন্দ্রবাবু নাইডু, ওয়াইএসআরসিপি নেতা জগন মোহন রেড্ডি, এআইএমআইএম-এর আসাদউদ্দিন ওয়াইসি ও বিআরএস প্রধান কে চন্দ্রশেখর রাও-এর নাম উল্লেখ করেন।
অমিত শাহর মন্তব্যের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “নকশালবাদ একটি দর্শন। আপনার যদি পছন্দ না হয়, তবে তা নিয়ে যুক্তি দিন, বিতর্ক করুন – কিন্তু এই ভাষা ব্যবহার ঠিক নয়।”

