নয়াদিল্লিতে ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’-এর উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী, বললেন— “ভারতের ক্ষুদ্রতম চিপ বদলে দেবে বিশ্বের ভবিষ্যৎ”

নয়াদিল্লি, ২ সেপ্টেম্বর: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দিল্লির যশোভাবনিতে ‘সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫’ সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন। তিন দিনব্যাপী এই সম্মেলনের মূল উদ্দেশ্য হল দেশে একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল ও টেকসই সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেম গড়ে তোলা। সম্মেলনে সেমিকন ইন্ডিয়া প্রোগ্রামের অগ্রগতি, স্মার্ট ম্যানুফ্যাকচারিং, গবেষণা ও উন্নয়নে উদ্ভাবন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিনিয়োগের সুযোগ এবং রাজ্যভিত্তিক নীতিমালার বাস্তবায়ন নিয়ে বিশেষ অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে।

সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ইলেকট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানান, “ইন্ডিয়া সেমিকন্ডাক্টর মিশন চালুর পর থেকে গোটা বিশ্বের আস্থা ভারতের প্রতি বেড়েছে। বর্তমানে দেশে পাঁচটি সেমিকন্ডাক্টর ইউনিট নির্মাণ কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে।” তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দেশের প্রথম ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’ চিপ উপহারও দেন। মন্ত্রী আরও জানান, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই দুটি নতুন উৎপাদন ইউনিট চালু হতে চলেছে।

প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, “বিশ্ব আজ ভারতের উপর আস্থা রাখছে, ভারতকে বিশ্বাস করছে এবং ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে সেমিকন্ডাক্টরের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে প্রস্তুত।” তিনি জানান, “দিন বেশি দূরে নয়, যেদিন ভারতের ক্ষুদ্রতম চিপ থেকেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরিবর্তন সূচিত হবে।” তিনি তুলনা করে বলেন, “এক সময় তেল ছিল কালো সোনা, এখন চিপস্ হল ডিজিটাল হীরা। বিংশ শতকে বিশ্বশক্তি গড়ে উঠেছিল তেলের উপর ভিত্তি করে, আর একবিংশ শতকে সেই শক্তির উৎস হবে এই ছোট্ট চিপস।”

প্রধানমন্ত্রী জানান, বিশ্বে সেমিকন্ডাক্টর বাজার আগামী বছরে ১ ট্রিলিয়ন ডলার অতিক্রম করতে চলেছে এবং ভারতের বর্তমান অগ্রগতির গতি বজায় থাকলে, এই বাজারে ভারতের অংশীদারিত্ব উল্লেখযোগ্য হবে। ২০২১ সালের পর থেকে যে ১০টি সেমিকন্ডাক্টর প্রকল্প অনুমোদন পেয়েছে, তাতে প্রায় ১৮ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ হয়েছে বলেও তিনি জানান।

তিনি আরও বলেন, দেশের চাহিদা মেটাতে এবং ভবিষ্যতের প্রযুক্তিগত প্রয়োজনে উপযুক্ত খনিজ পদার্থের জোগান নিশ্চিত করতে ভারত ‘ক্রিটিক্যাল মিনারেলস মিশন’-এর উপর কাজ করছে। একই সঙ্গে মোদী ঘোষণা করেন, সরকার খুব শীঘ্রই ‘পরবর্তী প্রজন্মের সংস্কার’ চালু করবে।

জিডিপির সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্বের অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংকট সত্ত্বেও ভারত প্রথম ত্রৈমাসিকে প্রত্যাশার চেয়ে বেশি ৭.৮ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। এই সাফল্য ভারতের অর্থনৈতিক দৃঢ়তা এবং নীতিগত অগ্রগতির প্রমাণ।”

উল্লেখ্য, সেমিকন ইন্ডিয়া ২০২৫ সম্মেলন আগামী তিন দিন ধরে চলবে এবং দেশের সেমিকন্ডাক্টর খাতকে গতি দিতে গবেষণা, প্রযুক্তি, বিনিয়োগ এবং নীতিনির্ধারণী দিক থেকে এক নতুন দিশা দেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে।