আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে প্রাণহানি: ভারত থেকে মানবিক সহায়তা, জয়শঙ্করের সঙ্গে মুততাকির ফোনালাপ

নয়াদিল্লি/কাবুল, ১ সেপ্টেম্বর : আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে রবিবার রাতে সংঘটিত ৬.০ মাত্রার বিধ্বংসী ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত ৮১২ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। আহতের সংখ্যা কয়েকশো ছাড়িয়ে গেছে। এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আফগানিস্তানের পাশে দাঁড়াল ভারত।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রী এস. জয়শঙ্কর** সোমবার আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুততাকির সঙ্গে ফোনে কথা বলেন এবং গভীর সমবেদনা জানান এই মর্মান্তিক ঘটনার জন্য। জয়শঙ্কর জানিয়েছেন, আফগান জনগণের জন্য সহায়তা হিসেবে ১০০০টি পারিবারিক তাঁবু ও ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী ইতিমধ্যেই কাবুলে পাঠানো হয়েছে।

এক্স (সাবেক টুইটার)-এ জয়শঙ্কর লেখেন: “আজ আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাওলভি আমির খান মুততাকির সঙ্গে কথা বলেছি। ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর সমবেদনা জানিয়েছি। আজ কাবুলে ১০০০টি পারিবারিক তাঁবু পৌঁছেছে। ভারতীয় মিশনের মাধ্যমে ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী কাবুল থেকে কুনারে পাঠানো হচ্ছে। আগামীকাল থেকে আরও ত্রাণ সামগ্রী ভারতে থেকে রওনা হবে। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। এই কঠিন সময়ে ভারত আফগানিস্তানের পাশে আছে।”

আফগানিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে জয়শঙ্কর-মুততাকি ফোনালাপের কথা নিশ্চিত করেছে। তারা জানায়, ভারত সরকারের এই সহানুভূতি ও সহায়তার জন্য আফগান পক্ষ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে। মুততাকি আশ্বাস দেন, এই সহায়তা যথাসময়ে দুর্গতদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জয়শঙ্কর ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন এবং ১০০০টি তাঁবু ও ১৫ টন খাদ্যসামগ্রী সহায়তা হিসেবে পাঠানোর কথা জানিয়েছেন। তিনি জানান, ওষুধ এবং খাদ্যের আরও সহায়তা ভবিষ্যতে পাঠানো হবে। আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত সরকারের সহানুভূতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন এবং এই সহায়তা সময়মতো দুর্গতদের কাছে পৌঁছানো হবে বলে আশ্বাস দেন।”

এর আগে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এক্স-এ পোস্ট করে আফগানিস্তানের এই বিপর্যয়ে গভীর দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি লেখেন: আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় গভীরভাবে শোকাহত। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করি। ভারত যেকোনো ধরনের মানবিক সহায়তা দিতে প্রস্তুত।

ভূমিকম্পটি রবিবার রাতে রাত ১১:৪৭ মিনিটে আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানে। ভূপৃষ্ঠের ৮ কিলোমিটার গভীরে উৎসস্থল ছিল বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা।

সরকারি সূত্রে জানা গেছে, দুর্গম পার্বত্য অঞ্চলে উদ্ধারকারী দলগুলো যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে চরম সমস্যার মুখে পড়ছে। অনেক এলাকা এখনও সম্পূর্ণভাবে বিচ্ছিন্ন, ফলে ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত চিত্র এখনও স্পষ্ট নয়।
আফগানিস্তান ভারত ও ইউরেশিয়া টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থিত হওয়ায় ভূমিকম্পপ্রবণ। বিশেষ করে দেশের পূর্বাঞ্চলীয় পার্বত্য অঞ্চলগুলিতে ভূমিকম্প ও ভূমিধসের ঝুঁকি বেশি, যা উদ্ধারকাজকে আরও জটিল করে তোলে।