সানা/জেরুজালেম, ৩০ আগস্ট : ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হুথিদের বিরুদ্ধে ইয়েমেনের রাজধানী সানায় একটি বড়সড় বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এই হামলায় হুথিদের সামরিক ও রাজনৈতিক নেতৃত্বে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবর মিলেছে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, একটি অ্যাপার্টমেন্ট লক্ষ্য করে চালানো এই হামলায় হুথি প্রধানমন্ত্রী আহমেদ আল-রাহাওয়ি এবং তার একাধিক সহযোগী নিহত হয়েছেন।
হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিলেন হুথি গোষ্ঠীর শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তারা। ইসরায়েলি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন, এই হামলায় হুথি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী মোহাম্মদ আল-আতিফি এবং চিফ অব স্টাফ মোহাম্মদ আবদ আল-করিম আল-ঘামারিকে হত্যা করা হয়েছে। ওই সময় তারা একটি উচ্চপর্যায়ের মন্ত্রিসভা বৈঠকে অংশ নিচ্ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য, আল-ঘামারি এর আগেও একটি ইসরায়েলি হামলায় আহত হয়েছিলেন।
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা মন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং সামরিক প্রধান জেনারেল আইয়াল জামির যৌথভাবে এই হামলার অনুমোদন দেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রী কাটজ বলেন, “হুথিরা ইসরায়েলকে লক্ষ্যবস্তু বানানোর ফলাফল সম্পর্কে সচেতন ছিল।”
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সানার একটি সামরিক স্থাপনায় “হুথি সন্ত্রাসী শাসনের” বিরুদ্ধে নির্ভুল হামলা চালানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, হুথি গোষ্ঠী ইয়েমেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের অধিকাংশ এলাকা, রাজধানী সানা এবং লোহিত সাগরের উপকূলীয় অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে। গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকেই তারা নিয়মিতভাবে ইসরায়েলের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন ছুড়ছে, সেইসঙ্গে লোহিত সাগরে বাণিজ্যিক জাহাজগুলিকেও লক্ষ্য করছে।
হুথিদের এই আক্রমণাত্মক অবস্থানের জবাবে, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন একটি আন্তর্জাতিক জোট বিগত কয়েক মাস ধরে ইয়েমেনের হুথি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল—সানাসহ কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বন্দরনগরী হোদেইদায় লাগাতার ভারী বোমা হামলা চালিয়ে আসছে।
এই সর্বশেষ বিমান হামলাকে ইসরায়েলের পাল্টা জবাব হিসেবে দেখা হচ্ছে, যা হুথিদের ওপর কৌশলগত চাপ আরও বাড়াবে বলে মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা। যদিও হুথিদের পক্ষ থেকে এখনও পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়।

