বিশ্ব রাজনীতিতে ভারসাম্যের পরিবর্তন: মোদী-ইশিবার সাক্ষাৎ, ব্রিকস জি৭-কে ছাড়িয়ে, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে সতর্কবার্তা অর্থনীতিবিদের

নয়াদিল্লি/টোকিও, ২৯ আগস্ট: ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জাপান সফরে রয়েছেন এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার বার্তা দিয়েছেন দুই নেতা। টোকিওতে ১৫তম ভারত-জাপান বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলনে আজ মুখোমুখি হবেন তাঁরা। একইসঙ্গে, বিশ্বের অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক ভারসাম্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন খ্যাতনামা মার্কিন অর্থনীতিবিদ রিচার্ড উল্ফ।

রিচার্ড উল্ফ তাঁর এক পডকাস্টে বলেন, “বিশ্বব্যাপী এক বড় অর্থনৈতিক পালাবদল ঘটছে। ব্রিকস দেশগুলি বর্তমানে বৈশ্বিক উৎপাদনের ৩৫ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করছে, যেখানে জি৭ দেশগুলির অংশ মাত্র ২৮ শতাংশ।”*

তিনি আরও বলেন,”ভারত, বিশ্বের বৃহত্তম দেশ হিসেবে, যখন রাশিয়া থেকে তেল কেনা বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চাপ প্রত্যাখ্যান করে, তখন স্পষ্ট হয়ে যায় যে ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু বদলাচ্ছে। এখন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে ভারতকে নির্দেশ দেওয়া মানে যেন একটি ইঁদুর হাত দিয়ে একটি হাতিকে মারার চেষ্টা করছে।”

উল্ফ সতর্ক করেছেন যে, চীন যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ড বিক্রি করছে, আর আমেরিকার ঋণের পরিমাণ ছুঁয়েছে ৩৬ ট্রিলিয়ন ডলার। এই প্রবণতা বজায় থাকলে ডলারের উপর আন্তর্জাতিক আস্থা কমে যেতে পারে, যার ফলে ঋণের সুদ বাড়তে পারে অথবা মার্কিন ঘরোয়া খাতে ব্যয় হ্রাস পেতে পারে।

তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের আমদানি শুল্ক বা ট্যারিফ নীতির কড়া সমালোচনা করে বলেন,”এই নীতি ব্যর্থ। এটা শুধু ভারত, চীন বা ব্রাজিলের মতো ব্রিকস দেশগুলিকে আরও ঘনিষ্ঠ করে তুলছে, আর পশ্চিমা বিশ্ব থেকে দূরে সরাচ্ছে।”

তিনি বলেন,”যে কোম্পানিগুলি বর্তমানে ভারত, চীন বা ব্রাজিলে উৎপাদন করছে, তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে এসে বিপুল অর্থ খরচ করে উৎপাদন শুরু করবে—এটা ভাবা অবাস্তব।”

ট্রাম্প প্রশাসন ভারতে ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত ট্যারিফ আরোপ করেছে, যার ফলে মোট শুল্ক দাঁড়িয়েছে ৫০ শতাংশে। এর জবাবে প্রধানমন্ত্রী মোদী স্পষ্ট জানিয়েছেন,”ভারতের কৃষক ও ক্ষুদ্র ব্যবসার স্বার্থে কোনও আপস করা হবে না। এই শুল্ক ‘অন্যায্য ও অবিচারসুলভ’।”

জাপান সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী মোদী ৩১ আগস্ট চীনের তিয়ানজিনে অনুষ্ঠিতব্য সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিতে যাবেন। সেখানে রবিবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনফিং-এর সঙ্গে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এটি গত সাত বছরে মোদীর প্রথম চীন সফর এবং শি চিনফিং-এর সঙ্গে তাঁর সরাসরি বৈঠক।