ভারত থেকে আবারও পেঁয়াজ আমদানি শুরু, পাঁচ মাস পর হিলি ও সোনামসজিদ দিয়ে এল প্রথম চালান

দিনাজপুর, ১৮ আগস্ট : বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারত থেকে স্থলবন্দর হয়ে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সরকারিভাবে অনুমতি প্রদানের পর শনিবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দর দিয়ে প্রথম চালানে ১৫০ টন পেঁয়াজ বাংলাদেশে প্রবেশ করে। এরপর সন্ধ্যায় চাঁপাইনবাবগঞ্জের সোনামসজিদ স্থলবন্দর দিয়ে আরও ৬৬০ টন পেঁয়াজ আসে ২৩টি ট্রাকে করে। হিলি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এর আগে সর্বশেষ ২ মার্চ ভারত থেকে একটি ট্রাকে ২৯ টন পেঁয়াজ এসেছিল, এরপর স্থানীয় উৎপাদনের দাম কমে যাওয়ায় ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা হ্রাস পায় এবং আমদানি বন্ধ হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি বাজারে পেঁয়াজের দাম আবারও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় আমদানিকারকরা কৃষি মন্ত্রণালয়ে আমদানির অনুমতির জন্য আবেদন করে। এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় সাতটি আমদানি প্রতিষ্ঠানকে ভারত থেকে পেঁয়াজ আনতে অনুমতি দেয়। হিলি স্থলবন্দরের উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপপরিচালক আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর ২টা পর্যন্ত মোট ২৩০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেসব প্রতিষ্ঠান এই অনুমতি পেয়েছে, সেগুলো হলো এম/এস সততা বাণিজ্যালয়, এম/এস নাশাত ট্রেডার্স, এমএস আল মক্কাহ ইমপ্রেস, এম/এস জগদীশ চন্দ্র রায়, ক্রাউন ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনাল, আনাস গ্রুপ প্রাইভেট লিমিটেড এবং রাধে-শ্যাম অ্যান্ড সন্স। এর মধ্যে রাধে-শ্যাম অ্যান্ড সন্সকে ৫০ টন এবং অন্য ছয়টি প্রতিষ্ঠানকে ৩০ টন করে পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। আনোয়ার হোসেন বলেন, যদি আরও প্রতিষ্ঠানকে অনুমতি দেওয়া হয়, তাহলে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে। এম/এস সততা বাণিজ্যালয়ের স্বত্বাধিকারী বাবুলুর রহমান জানান, তিনি হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ৩০ টন পেঁয়াজ আমদানির অনুমতি পেয়েছেন এবং এই পেঁয়াজ শনিবার বিকেলে এক ট্রাকে করে পৌঁছাবে। কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের পর মূল্য নির্ধারণ করে পাইকারি বাজারে ছাড়া হবে। এদিকে দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কাটলাবাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা ইস্তামুল হক জানান, তিনি প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকায় বিক্রি করছেন। তবে তিনি বলেন, “শুনছি ভারত থেকে পেঁয়াজ ঢুকছে। যদি বাজারে বেশি পেঁয়াজ আসে তাহলে দাম অবশ্যই কমবে, তবে এতে আমাদের লোকসান হবে, কারণ আমরা বেশি দামে পেঁয়াজ কিনে ফেলেছি।” বাজার বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতীয় পেঁয়াজ বাজারে আসার ফলে দেশের বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাবে এবং এতে দাম কিছুটা হলেও নিয়ন্ত্রণে আসবে। তবে আগের দামে সংগ্রহ করা পণ্য নিয়ে খুচরা বিক্রেতাদের কিছুটা লোকসান গুনতে হতে পারে। তবুও সামগ্রিকভাবে বাজার স্থিতিশীল করার লক্ষ্যে এই আমদানিকে ইতিবাচক উদ্যোগ হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্ট মহল।