জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর অংশগ্রহণ নিয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নয়

নিউ ইয়র্ক, ১৩ আগস্ট : জাতিসংঘের ৮০তম সাধারণ পরিষদের উচ্চ পর্যায়ের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ভাষণ দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, তবে এখনো পর্যন্ত ভারতের পক্ষ থেকে বিষয়টি চূড়ান্তভাবে নিশ্চিত করা হয়নি। জাতিসংঘ সদর দপ্তর থেকে প্রকাশিত বক্তাদের একটি প্রাথমিক তালিকায় দেখা গেছে, ভারতের “সরকারপ্রধান” ২৬ সেপ্টেম্বর সকালে সাধারণ বিতর্কে ভাষণ দেওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত আছেন। ওই দিনেই ভাষণ দেবেন চীন, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও ইসরায়েলের সরকারপ্রধানরাও।

৮০তম অধিবেশন শুরু হবে ৯ সেপ্টেম্বর এবং উচ্চ পর্যায়ের সাধারণ বিতর্ক পর্ব চলবে ২৩ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। প্রতিবারের মতো এবারও ব্রাজিল অধিবেশনের প্রথম বক্তা, এরপর ভাষণ দেবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এটি হবে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদে জাতিসংঘে তাঁর প্রথম ভাষণ।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী মোদী যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পর দুই দেশ যৌথভাবে ঘোষণা করে যে, একটি বহুমুখী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির প্রথম ধাপ শরতেই সম্পন্ন করা হবে। তবে বাণিজ্য আলোচনা চলার মধ্যেই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ভারতীয় পণ্যের উপর অতিরিক্ত ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন, যার মধ্যে ২৫ শতাংশ শুধু রাশিয়া থেকে আমদানি করা তেলের ওপর আরোপিত হয়েছে। এই নতুন শুল্ক কার্যকর হবে ২৭ আগস্ট থেকে।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই শুল্ক আরোপকে “অন্যায্য ও অযৌক্তিক” বলে আখ্যা দিয়ে জানিয়েছে, “ভারত তার জাতীয় স্বার্থ এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা রক্ষায় প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।” এরই মাঝে, আগামী ২৫ আগস্ট থেকে যুক্তরাষ্ট্রের একটি প্রতিনিধি দল ভারতে আসছে বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে ষষ্ঠ দফার আলোচনার জন্য। উভয় দেশই অক্টোবরে এই চুক্তির প্রথম পর্ব চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের বক্তাদের তালিকাটি এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, এবং শেষ মুহূর্তে সময়সূচি ও বক্তাদের নাম পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জাতিসংঘ সূত্র জানিয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও সেপ্টেম্বর মাসকে জাতিসংঘের “সবচেয়ে ব্যস্ত কূটনৈতিক মৌসুম” হিসেবে ধরা হচ্ছে।

এবারের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হচ্ছে যখন বিশ্বজুড়ে একাধিক সংকট, যেমন ইজরায়েল-হামাস যুদ্ধ এবং ইউক্রেন সংঘাত, আন্তর্জাতিক অঙ্গনে গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দাবি করেছেন, তাঁর দ্বিতীয় মেয়াদের প্রথম ছয় মাসেই তিনি আর্মেনিয়া-আজারবাইজান, কম্বোডিয়া-থাইল্যান্ড, ইজরায়েল-ইরান, রুয়ান্ডা-কঙ্গো, মিশর-ইথিওপিয়া এবং সার্বিয়া-কসোভোর মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আরো দাবি করেন, মে মাসে ভারত-পাকিস্তান সীমান্ত উত্তেজনাও তিনি থামিয়েছেন।