‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযান: দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর তিরঙ্গা উত্তোলন, দেশজুড়ে দেশপ্রেমের জোয়ার

নয়াদিল্লি, ১৩ আগস্ট : ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের অংশ হিসেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বুধবার তাঁর নয়াদিল্লির বাসভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। তিনি এই আন্দোলনকে জাতিকে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ করার একটি গণ-আন্দোলন হিসেবে বর্ণনা করেন, যা দেশবাসীর মধ্যে দেশপ্রেমের অনুভূতি আরও দৃঢ় করে। গত তিন বছরে এই কর্মসূচি সর্বস্তরের মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে একটি ব্যাপক সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে।

এক্স-এ দেওয়া পোস্টে অমিত শাহ লেখেন, “আজ ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের আওতায় নিজের বাসভবনে তিরঙ্গা উত্তোলন করেছি। মোদী জির নেতৃত্বে শুরু হওয়া এই অভিযান আজ মানুষের আন্দোলনে রূপ নিয়েছে, যা জাতিকে ঐক্যের সুতোয় বেঁধে দেশপ্রেমের চেতনাকে আরও মজবুত করেছে।” তিনি আরও বলেন, “এই কর্মসূচি প্রমাণ করে যে ১৪০ কোটি ভারতবাসী প্রতিজ্ঞাবদ্ধ—তাঁরা সেই স্বাধীন ভারতের গড়নে নিবেদিত, যে স্বপ্নকে বাস্তব করতে আমাদের অগণিত স্বাধীনতা সংগ্রামী আত্মত্যাগ করেছেন।”

‘হর ঘর তিরঙ্গা’ অভিযানের মূল উদ্দেশ্য প্রতিটি ভারতীয় নাগরিককে তাঁদের বাড়িতে তিরঙ্গা উত্তোলনের মাধ্যমে স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপন করতে উদ্বুদ্ধ করা। একই সঙ্গে এর মাধ্যমে নাগরিকদের মধ্যে জাতীয় পতাকার তাৎপর্য সম্পর্কে সচেতনতা এবং দেশপ্রেমের অনুভূতি আরও গভীর করা হচ্ছে।

সংস্কৃতি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত সোমবার জনগণকে অভিযানের চতুর্থ সংস্করণে উৎসাহের সঙ্গে অংশ নিতে আহ্বান জানান এবং জাতীয় পতাকার সম্মান ও মর্যাদা রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। এ বছর এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য পাঁচ লক্ষেরও বেশি যুবক স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে নিবন্ধন করেছেন, যারা দেশজুড়ে সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন।

মঙ্গলবার দিল্লির ভারত মণ্ডপম থেকে একটি বিশাল ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ র‍্যালির সূচনা হয়। এই র‍্যালিতে অংশ নেন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত, প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী সঞ্জয় শেঠ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্তা এবং একাধিক সংসদ সদস্য। র‍্যালির উদ্দেশ্য ছিল নাগরিকদের মধ্যে তিরঙ্গা উত্তোলনের আগ্রহ ও জাতীয় চেতনা জাগানো।

স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জম্মু ও কাশ্মীরের ডোডা জেলায় অনুষ্ঠিত হয় একটি রেকর্ড গড়া ‘মেগা তিরঙ্গা র‍্যালি’, যেখানে ১৫০৮ মিটার দীর্ঘ জাতীয় পতাকা প্রদর্শিত হয়। এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটি স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে দীর্ঘদিন মনে রাখার মতো এক গর্বের উপলক্ষ হয়ে থাকবে।

দেশজুড়ে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ কর্মসূচি স্বাধীনতা দিবস উদ্‌যাপনের এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এই আন্দোলন একদিকে যেমন নাগরিকদের মধ্যে দেশপ্রেমের অনুভূতি জাগাচ্ছে, অন্যদিকে জাতীয় পতাকার মর্যাদা ও গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতাও বৃদ্ধি করছে।