চেন্নাই, ৩১ জুলাই : এক নাটকীয় রাজনৈতিক মোড়ে দাঁড়িয়ে তামিলনাডুতে এনডিএ জোট। তামিলনাড়ুর প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও এআইএডিএমকে থেকে বহিষ্কৃত নেতা ও. পন্নীরসেলভম ঘোষণা করেছেন, তাঁর দল বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ থেকে বেরিয়ে আসছে। চমকপ্রদ বিষয় হল, এই ঘোষণা আসে মুখ্যমন্ত্রী এম. কে. স্টালিনের সঙ্গে প্রাতঃভ্রমণের ঠিক কয়েক ঘণ্টা পর।
সূত্র অনুযায়ী, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে ও. পন্নীরসেলভম সম্প্রতি তামিলনাড়ুর গঙ্গাইকোন্ড চোলপুরম সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখেন এবং সাক্ষাতের আবেদন জানান। চিঠিতে তিনি উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা আমার একান্ত গৌরবের বিষয় হবে।
তবে মোদির পক্ষ থেকে কোনও সাক্ষাতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এই ঘটনাকে ‘অবজ্ঞা’ হিসেবে ব্যাখ্যা করে পন্নীরসেলভম কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন এবং সামাজিক মাধ্যমে সার্ব শিক্ষা অভিযান তহবিল বিলম্বে মঞ্জুর হওয়া নিয়ে কেন্দ্রকে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই মনে করা হচ্ছে, পন্নীরসেলভমের জোটবিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়েছে।
ঘোষণাটি করেন পন্নীরসেলভমের দীর্ঘদিনের সহযোগী ও প্রাক্তন মন্ত্রী পনরুতি এস. রামচন্দ্রন। তিনি বলেন, আমরা এনডিএ থেকে বেরিয়ে আসছি। বর্তমানে আমাদের কোনও দলের সঙ্গে জোট নেই। ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের আগে পরিস্থিতি বুঝে জোট নিয়ে সিদ্ধান্ত নেব। ঘোষণার সময় উপস্থিত ছিলেন ও. পন্নীরসেলভম নিজেও। অভিনেতা বিজয়ের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজাগম-এর সঙ্গে জোট নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, সময়ই বলে দেবে। এখনও অনেকটা সময় বাকি আছে।
উল্লেখ্য, ও. পন্নীরসেলভম একসময় এআইএডিএমকে-এর গুরুত্বপূর্ণ মুখ ছিলেন এবং বিজেপি-র ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এআইএডিএমকে-র অভ্যন্তরীণ নেতৃত্বের দ্বন্দ্বের জেরে তিনি নিজস্ব রাজনৈতিক দল গঠন করেন।
পন্নীরসেলভমের এই পদক্ষেপ এখন তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক জগতে নতুন সম্ভাবনা ও সমীকরণের আভাস দিচ্ছে। বিশেষত ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে ঘিরে। প্রশ্ন উঠছে, এই জোটবিচ্ছেদ বিজেপি ও এআইএডিএমকে-এর প্রভাববিস্তার কতটা কমিয়ে দেবে এবং নতুন জোট গঠনের ক্ষেত্রে কে কার পাশে দাঁড়াবে? রাজ্য রাজনীতিতে এ যে নতুন অধ্যায়ের সূচনা, তা বলাই যায়।

