আগরতলা,২৪ জুলাই : ত্রিপুরার বিদ্যুৎ খাতে এক যুগান্তকারী সাফল্য ধরা দিয়েছে। রাজ্যের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থায় সৌরশক্তির ব্যবহারে ইতিমধ্যেই ২ মেগাওয়াট উৎপাদন ছুঁয়েছে, যা এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। এই অগ্রগতি রাজ্যকে ক্রমশ আত্মনির্ভরতার পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। রাজ্য বিদ্যুৎ নিগম লিমিটেডের তরফে সকল বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছে বক্তব্য—নিজের ছাদেই বিদ্যুৎ তৈরি করে বিদ্যুৎ বিল শূন্য করার পাশাপাশি আয় করার এক অনন্য সুযোগ এনে দিয়েছে ‘পিএম সূর্য ঘর মুফত বিজলি যোজনা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত ধরে ২০২৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি সূচিত এই প্রকল্পের লক্ষ্য—প্রত্যেক বাড়িতে সোলার প্যানেল বসিয়ে নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবস্থা করা, যাতে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ বিলের বোঝা থেকে মুক্তি পান এবং অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
ত্রিপুরা রাজ্যে ইতিমধ্যেই এই যোজনায় ১৫,৭৩০টি নিবন্ধন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৯১টি স্থানে সোলার ইনস্টলেশন সম্পূর্ণ এবং ৫১৬ জন ইতিমধ্যেই সরকারি ভর্তুকি পেয়েছেন। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য, চলতি মাসেই ১১৭ জন উপভোক্তা বিদ্যুৎ বিল একেবারে শূন্যে নামিয়ে এনে ৪৩ হাজার ৫৪৫ টাকা আয় করেছেন। ইতিমধ্যেই তাদের একাউন্টে এই টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই প্রকল্পে একজন গ্রাহক সর্বোচ্চ ৮৫,৮০০ টাকা পর্যন্ত সরকারি ভর্তুকি পেতে পারেন। মাত্র ১ কিলোওয়াট ক্ষমতার সোলার প্ল্যান্ট গড়ে ১০০ ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে—যা সাধারণ একটি পরিবারের মাসিক চাহিদা মেটাতে যথেষ্ট। অতিরিক্ত বিদ্যুৎ গ্রিডে যুক্ত করে প্রতি মাসে আয় করাও সম্ভব। বিদ্যুৎ খরচ বাঁচানো তো আছেই, সাথে আয়ও নিশ্চিত।
এই যোজনার সফল বাস্তবায়নে ত্রিপুরা স্টেট ইলেকট্রিসিটি কর্পোরেশন লিমিটেড উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছে। লক্ষ্য আগামী এক বছরে ৫০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন—যা রাজ্যের বিদ্যুৎ খাতকে সত্যিকারের স্বনির্ভরতার পথে নিয়ে যেতে পারে। আজকের দিনে যখন বিদ্যুতের দাম বাড়ছে, তখন নিজের ছাদ অথবা বাড়িকেই শক্তির উৎস বানানো কেবল ভবিষ্যতমুখী সিদ্ধান্ত নয়, বরং অর্থনৈতিক স্বাধীনতার এক চাবিকাঠিও বটে। তাই দেরি না করে, এখনই সরকারি ওয়েবসাইটে গিয়ে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য সকল বিদ্যুৎ গ্রাহকদের কাছে আবেদন জানিয়েছে নিগম। তাদের আবেদন, নিজের ঘরকেই বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানান, বিদ্যুৎ বিল শূন্য করুন, আয় শুরু করুন। দেশ হোক আত্মনির্ভর, আপনি হোন নিজের শক্তির কারিগর।

