নয়াদিল্লি, ২২ জুলাই : ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে শুরু হওয়া শীতকালীন কুয়াশা পরীক্ষা প্রকল্প সফলভাবে দশ বছর পূর্ণ করল। ২০১৫ সালের শীতে ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে, এই প্রকল্প উত্তর ভারতের শীতকালীন ঘন কুয়াশা নিয়ে বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘমেয়াদী ও সমন্বিত গবেষণায় পরিণত হয়েছে।
ভারতের তাপীয় আবহবিদ্যা ইনস্টিটিউট, আবহাওয়া দপ্তর ও ন্যাশনাল সেন্টার ফর মিডিয়াম রেঞ্জ ফোরকাস্টিং-এর যৌথ উদ্যোগে, ওয়াইফেক্স প্রকল্প ঘন কুয়াশার গঠন, স্থায়িত্ব ও প্রভাব নিয়ে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করেছে। জেওয়ার, নয়ডা ও হিসারের মতো বিমান চলাচল-কেন্দ্রিক এলাকাতেও সম্প্রসারিত হয়েছে ওয়াইফেক্স-এর পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক।
এই গবেষণার ফলে ৩ কিলোমিটার রেজোলিউশনের একটি উন্নত কুয়াশা পূর্বাভাস মডেল তৈরি হয়েছে, যা ৮৫% নির্ভুলতায় দৃষ্টিসীমা ২০০ মিটারের কম এমন ঘন কুয়াশার ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম। ফলে শীতকালীন মাসে বিমান চলাচলের সময় বিলম্ব, ডাইভারশন ও দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেকটাই কমানো সম্ভব হয়েছে।
ওয়াইফেক্স শুধুমাত্র পূর্বাভাসের সীমায় আবদ্ধ না থেকে, কুয়াশার পেছনের বৈজ্ঞানিক কারণগুলিও উন্মোচন করেছে — যেমন বায়ু দূষণ, নগর তাপদ্বীপ প্রভাব, ভূমি ব্যবহারের পরিবর্তন, ও বায়ুতে থাকা সূক্ষ্ম কণার প্রভাব। এই তথ্য এখন নগর পরিকল্পনা, পরিবেশ নীতি ও বায়ু মান নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
এই সাফল্যের পর ওয়াইফেক্স-II পর্বে প্রবেশ করেছে প্রকল্পটি, যেখানে আরও বিমানবন্দরে রানওয়ে-নির্দিষ্ট সেন্সর বসানো হবে এবং স্থানীয় পূর্বাভাস আরও নিখুঁত করে তোলা হবে।
দশ বছরের পরিশ্রমী গবেষণার ফসল ওয়াইফেক্স আজ কুয়াশা-বিজ্ঞান ও বাস্তব নীতিনির্ধারণের সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে — আর এটি প্রমাণ করছে যে বিজ্ঞান কেবল গবেষণার কক্ষেই নয়, বাস্তব জগতে পথ দেখাতেও সক্ষম।

