প্রতিরক্ষা সচিবের এভারেস্ট ও কিলিমাঞ্জারো পর্বত অভিযান দলের সম্মাননা জ্ঞাপন

নয়াদিল্লি, ১৭ জুলাই : প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং আজ দক্ষিণ ব্লকে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে মাউন্ট এভারেস্ট এবং মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো পর্বত আরোহণ অভিযান দলগুলিকে ফ্ল্যাগ-ইন করেন। এই অভিযানগুলি ভারতের পর্বত আরোহণ বিষয়ক শ্রেষ্ঠত্ব এবং অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস কার্যক্রমে নেতৃত্ব প্রদর্শনের একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী-স্থিত নেহেরু ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং-এর গৌরবময় ৬০ বছর পূর্তি উপলক্ষে মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানটি পরিচালিত হয়। এটি হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট, দার্জিলিং, পশ্চিমবঙ্গ এবং জওহর ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড উইন্টার স্পোর্টস, পহেলগাঁও, জম্মু ও কাশ্মীর-এর সহযোগিতায় আয়োজিত হয়েছিল।

এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন এনআইএম-এর অধ্যক্ষ কর্নেল অংশুমান ভাদোরিয়া। দলের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন কর্নেল হেম চন্দ্র সিং (উপ-নেতা) এবং তিনটি প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষক রাকেশ সিং রানা, সুব বাহাদুর পাহান, হাভ রাজেন্দ্র মুখিয়া, এনকে থুপস্টান সেওয়াং এবং পাসং তেনজিং শেরপা।

দলটি খুম্বু উপত্যকা দিয়ে আরোহণ করে এবং ২০২৫ সালের ২৩শে মে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করে। এই অভিযানের লক্ষ্য ছিল প্রশিক্ষকদের এভারেস্টের বাস্তব অভিজ্ঞতা প্রদান করা, যাতে তারা ভবিষ্যতের পর্বতারোহীদের অনুপ্রাণিত ও প্রশিক্ষণ দিতে পারেন।

আফ্রিকার সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো অভিযানটি এইচএমআই দ্বারা আয়োজিত হয়েছিল এবং এটি একটি বিশেষ দলের মাধ্যমে পরিচালিত হয়, যেখানে ৯১% হাঁটুর উপরে অঙ্গচ্ছেদযুক্ত একজন দিব্যাঙ্গজন সদস্য শ্রী উদয় কুমারও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।

এই অভিযানের নেতৃত্ব দেন এইচএমআই, দার্জিলিং-এর অধ্যক্ষ গ্রুপ ক্যাপ্টেন জয় কিষাণ। দলের অন্যান্য সদস্যরা ছিলেন ক্যাপ্টেন শ্রুতি, সুব মহেন্দ্র কুমার যাদব, পাবেল শর্মা এবং মিস সুলক্ষণা তামাং।

২০২৪ সালের ৮ই আগস্ট, অভিযান দলটি মাউন্ট কিলিমাঞ্জারোর চূড়ায় সবচেয়ে বড় জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করে একটি বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করে। পরবর্তীতে, দলটি তানজানিয়ার দার এস সালামের কাছে ভারত মহাসাগরে ৩৫ ফুট গভীরে জলের নিচে জাতীয় পতাকা প্রদর্শন করে। এরপর আফ্রিকান মহাদেশে প্রথমবারের মতো একটি দিব্যাঙ্গজন দল দ্বারা ট্যান্ডেম স্কাইডাইভ সম্পন্ন করা হয়। এই অভিযানটি স্থল, জল এবং আকাশ – এই তিনটি ক্ষেত্রেই নতুন মাইলফলক স্থাপন করেছে, যা প্রমাণ করে যে কোনও বাধাই নাগালের বাইরে নয়।

প্রতিরক্ষা সচিব রাজেশ কুমার সিং তাঁর বক্তব্যে উভয় দলের অদম্য চেতনা, দৃঢ় সংকল্প এবং সাহসিকতার ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই অভিযানগুলি কেবল শৃঙ্গ জয় করার জন্য নয়, বরং ভারতের পর্বত আরোহণ বিষয়ক শ্রেষ্ঠত্ব এবং অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস কার্যক্রমে নেতৃত্ব প্রদর্শনের জন্যও ছিল। তিনি আরও বলেন, মাউন্ট এভারেস্ট এবং মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো সফলভাবে জয় করার মাধ্যমে এই দলগুলি সারা দেশ এবং বিশ্বের তরুণ পর্বতারোহীদের অনুপ্রাণিত করার জন্য নতুন মানদণ্ড স্থাপন করেছে।

রাজেশ কুমার সিং যোগ করেন যে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সর্বদা যুবকদের ক্ষমতায়ন, আত্মনির্ভরতা এবং অ্যাডভেঞ্চারকে একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল এবং নির্ভীক ভারত গঠনের উৎস হিসেবে গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের চারটি পর্বত আরোহণ বিষয়ক প্রতিষ্ঠান – এইচএমআই, এনআইএম, জেআইএম অ্যান্ড ডব্লিউএস এবং ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মাউন্টেনিয়ারিং অ্যান্ড অ্যাডভেঞ্চার স্পোর্টস- কে এই দৃষ্টিভঙ্গির উজ্জ্বল উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করেন।