রাজস্থানে প্রবল বর্ষণে বন্যা পরিস্থিতি, কোটা-জোধপুর-জালোরে জলমগ্ন এলাকা, ১২ জনের মৃত্যু

জয়পুর, ১৫ জুলাই: প্রবল বর্ষণে রাজস্থানের একাধিক জেলা জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত জেলার মধ্যে রয়েছে কোটা, পালী, জালোর ও ধৌলপুর। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টিজনিত ঘটনায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। জোধপুরে দুটি আলাদা দুর্ঘটনায় এক কৃষক ও এক বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মী বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গেছেন।

কোটায় চম্বল নদীর জলস্তর বিপদসীমার অনেক ওপরে পৌঁছেছে। কোটা ব্যারেজ থেকে ছাড়া হয়েছে দুই লাখ কিউসেকের বেশি জল। ফলে নিচু এলাকাগুলি জলের তলায় চলে গেছে। ১০,০০০-রও বেশি বাসিন্দা গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন।

চম্বল নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে সাতজন প্রবল স্রোতে ভেসে যান। তাঁদের মধ্যে একজনকে উদ্ধার করা গেলেও বাকি ছয়জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী কোটার অনন্তপুর, রানপুর, দেবলি আরব ও কোটিল্য নগরে উদ্ধার কাজ শুরু করেছে। এখন পর্যন্ত ১৫০-রও বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। রানপুর এলাকায় এক ছাত্রী স্কুটার চালিয়ে যাওয়ার সময় স্রোতে ভেসে যায়। উদ্ধার করেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি।

জালোর ও জোধপুরে প্রবল বৃষ্টির কারণে মারওয়ার জাংশন থেকে লুনি পর্যন্ত রেলপথ ডুবে গেছে। মারওয়ার জংশন এবং পালী রুটেও জল জমে থাকায় বহু ট্রেন বাতিল, রি-শিডিউল বা ডাইভার্ট করা হয়েছে। সাবরমতী এক্সপ্রেস (জোধপুর-আহমেদাবাদ) বাতিল করা হয়েছে। বিকল্প রুট হিসেবে সামদাদি-ভিলাড়ি পথ ব্যবহার করা হচ্ছে।

পালিতে মরসুমি নদী উপচে পড়ায় শহরের একাধিক এলাকা জলের তলায় চলে গেছে। রামদেব রোড, সিন্ধি কলোনি, জয় নগর, শেখাওয়াত নগর, গান্ধী নগর ও নিউ প্রতাপ নগর এলাকায় জল জমেছে। সমস্ত স্কুল আজ বন্ধ রাখা হয়েছে। জেলা কালেক্টর এলএন মন্ত্রি ও পুলিশ সুপার চুনারাম জাট ট্র্যাক্টরে করে জলমগ্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

ধৌলপুরে ৪২৬ মিমি বৃষ্টির ফলে পার্বতী নদী উপচে পড়েছে। এর জেরে এক ডজনের বেশি গ্রাম শহরের সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়েছে। নারিপুরা ও সান্তনগরে তিনজন জলে ভেসে গেছেন।

আবহাওয়া বিভাগ রাজস্থানের পালী, কোটা, জোধপুর, চিত্তোরগড়, নাগৌর ও আজমেরে রেড অ্যালার্ট জারি করেছে। পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টার জন্য ভিলওয়াড়া, সিরোহি, বারান, টঙ্ক ও বুন্দিতে অরেঞ্জ অ্যালার্ট দেওয়া হয়েছে।

রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ভজনলাল শর্মা সমস্ত জেলা প্রশাসনকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। বৃষ্টি ও বন্যা পরিস্থিতির প্রতি নজর রাখতে বলা হয়েছে সমস্ত জেলা কালেক্টরদের।