এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা : আকাশে উড়তেই বন্ধ হয়ে যায় ইঞ্জিন, এএআইবি-এর প্রাথমিক রিপোর্টে তথ্য

নয়াদিল্লি, ১২ জুলাই : আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনার এক মাস পর ভারতের এয়ারক্রাফ্ট অ্যাকসিডেন্ট ইনভেস্টিগেশন ব্যুরো (এএআইবি) তাদের প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে প্রথমবারের মতো ফ্লাইট এআই১৭১-এর শেষ মুহূর্তের ঘটনা সরকারিভাবে বিশ্লেষণ করে তুলে ধরা হয়েছে। আকাশে উড়তেই জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ওই বিমানের দুইটি ইঞ্জিনই বিকল হয়ে গেছিল।

১২ জুনের ওই দুর্ঘটনায় বিমানে থাকা ২৪২ জন যাত্রীর মধ্যে ২৪১ জন এবং মাটিতে থাকা আরও ১৯ জন, মোট ২৬০ জন প্রাণ হারান। বিমানটি আহমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণের মধ্যেই একটি ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিধ্বস্ত হয়।

এএআইবি-এর ১৫ পৃষ্ঠার প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিমানের দুই ইঞ্জিনেই জ্বালানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় উড্ডয়নের ঠিক পরপরই। যার ফলে ইঞ্জিনের গতি হঠাৎ কমে যায় এবং বিমানটি উচ্চতা হারাতে শুরু করে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় সময় দুপুর ১টা ৩৮ মিনিট ৪২ সেকেন্ডে (ইউটিসি ০৮:০৮:৪২) বোয়িং ৭৮৭-৮ ড্রিমলাইনারটি ১৮০ নটের সর্বোচ্চ গতি অর্জন করে। ঠিক তার পরেই মাত্র ১ সেকেন্ডের ব্যবধানে ইঞ্জিন ১ এবং ইঞ্জিন ২-এর ফুয়েল কাট-অফ সুইচ ‘চালু’ থেকে ‘বন্ধ’ অবস্থানে চলে যায়।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, ককপিট ভয়েস রেকর্ডারে এক পাইলটকে জিজ্ঞেস করতে শোনা যায়, “তুমি কেন কাট-অফ করলে?” অন্য পাইলট উত্তর দেন, “আমি করিনি”। এই কথোপকথন ইঙ্গিত দেয়, ফুয়েল কাট-অফ সুইচ বদলের ঘটনাটি ছিল অপ্রত্যাশিত ও সম্ভবত অনিচ্ছাকৃত।

এদিকে, কিছু সেকেন্ড পরেই দু’টি ইঞ্জিন পুনরায় চালু করার নির্দেশ দেওয়া হয়। ০৮:০৮:৫২ ইউটিসি-এ ইঞ্জিন ১-এর ফুয়েল সুইচ আবার রান অবস্থানে ফেরানো হয়। ০৮:০৮:৫৬ ইউটিসি-এ ইঞ্জিন ২-এর ফুয়েল সুইচও চালু করা হয়।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইঞ্জিন ১ দ্রুত গতি পুনরুদ্ধার করে, কিন্তু ইঞ্জিন ২ সেই গতি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়। ইঞ্জিন ২ একাধিকবার জ্বালানি গ্রহণ করেও পর্যাপ্ত থ্রাস্ট দিতে পারেনি। এই কারণে বিমানটি অবশেষে নিয়ন্ত্রণ হারায়।