ধর্মনগর, ৫ জুলাই : ধর্মনগর মহকুমার ৫৪-কুর্তি কদমতলা বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত সিডিপিও অফিস থেকে ৩১৯টি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। এই গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরের দায়িত্বে রয়েছেন সিডিপিও বিশ্বজিৎ দাস। নিয়মিতভাবে অফিসে উপস্থিত থাকেন না বলে অভিযোগ। তাঁর ইচ্ছামতো অফিসে আসা-যাওয়ার কারণে প্রশাসনিক কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটছে এবং সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ বাড়ছে।
সম্প্রতি দপ্তরের প্রধান সহকারী (বড়বাবু) অবসর গ্রহণ করার পর তাঁর স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন কর্মী রুপি দে। কিন্তু তিনি বর্তমানে কার্যত অচল অবস্থায় রয়েছেন, কারণ তাঁর কাজের একমাত্র সহায়ক কম্পিউটারটি নেই। জানা গেছে, দপ্তরেরই এক কর্মী সেই কম্পিউটারটি অন্য একটি সেকশনে সরিয়ে নিয়ে গেছেন এবং সেখান থেকেই অফিসের যাবতীয় কাজ চালানোর দাবি করছেন। যদিও তাঁর নিজস্ব ল্যাপটপ রয়েছে, তবু সরকারি ল্যাপটপটি তিনি ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
অন্যদিকে, বড়বাবু রুপি দে’র কাছে বর্তমানে কোনো কম্পিউটার না থাকায় বেতন প্রক্রিয়াকরণ, অবসর সংক্রান্ত কাজসহ গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র পরিচালনার কাজ সম্পূর্ণ থমকে রয়েছে। জানা গেছে, সম্প্রতি অফিসের জন্য একটি ল্যাপটপ কেনা হয়েছে, কিন্তু সেটি কোথায় আছে তা নিয়ে কেউ নিশ্চিত নন। এ নিয়ে দপ্তরের ভেতরে বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ চরমে।
এই অবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে—প্রধান সহকারী কাজ করবেন কীভাবে। এবং সিডিপিও বিশ্বজিৎ দাস এই সমস্যা সমাধানে কী ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন, বলেও প্রশ্ন উঠেছে।
এছাড়াও, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রগুলিতে চাল-ডাল বণ্টন সংক্রান্ত এসএমপি প্রকল্পেও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ অনুসারে, সিডিপিও ও এসএমপি ইনচার্জের যোগসাজশে কেন্দ্রে নির্ধারিত ৪০ কেজি চাল-ডাল পাঠানোর পরিবর্তে কম পরিমাণ সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে শিশু ও মাতৃসেবা প্রকল্পে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য, কদমতলা সিডিপিও অফিসে যোগদানের আগে বিশ্বজিৎ দাস পানিসাগর সিডিপিও অফিসে কর্মরত ছিলেন, যেখানে তিনিও এসএমপি ইনচার্জের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, সেখানেও একই ধরনের চাল-ডাল বণ্টনে অনিয়মের ঘটনা ঘটে, যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হওয়ার পরেই তাঁকে কদমতলায় বদলি করা হয়।
এই পরিস্থিতিতে দপ্তরের স্বচ্ছতা, কার্যকারিতা এবং জবাবদিহিতার বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন এলাকাবাসী। তাঁরা দ্রুত মন্ত্রী টিংকু রায়ের হস্তক্ষেপ দাবি করছেন, যাতে দপ্তরের স্বাভাবিক কার্যক্রম পুনরায় সচল হয় এবং সাধারণ মানুষ সঠিক পরিষেবা পেতে পারেন।

