গুয়াহাটি , ২৫ জুন: আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা আবারও জানিয়ে দিলেন, রাজ্যের অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে তাঁর সরকার আগের থেকেও আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে চলেছে। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আমি আমাদের জমি রক্ষায় নেশাগ্রস্ত। প্রতিটি অসমীয়াকে জেগে উঠতে হবে এবং যা আমাদের তার পুনরুদ্ধারে এগিয়ে আসতে হবে। অবৈধভাবে দখল করা বনাঞ্চল ও জলাভূমি আমি পুনরুদ্ধার করেই ছাড়ব।”
মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে আগামী এক মাসের মধ্যেই রাজ্যজুড়ে নতুন করে বড় মাপের উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে। তাঁর কথায়, “আমি পুরোপুরি সংকল্পবদ্ধ। এই বিষয়ে কোনও আপোস হবে না।”
তিনি আরও বলেন, “আসামের ইতিহাসে বিষ্ণুরাম মেধি-র পর আমি একমাত্র মুখ্যমন্ত্রী, যিনি এত বিপুল পরিমাণ জমি দখলমুক্ত করে জনগণের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছি।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একদিকে যেমন নিজেকে শক্তিশালী ভূমি-সংরক্ষক হিসেবে তুলে ধরলেন, তেমনি ফের শুরু হতে চলা উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে নতুন করে রাজনৈতিক ও মানবিক বিতর্কের ইঙ্গিতও দিলেন।
উল্লেখ্য, পূর্ববর্তী উচ্ছেদ অভিযানগুলিতে রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। বহু মানুষ ঘরছাড়া হয়েছেন, যার ফলে জাতিসত্তা, ভূমি অধিকারের প্রশ্নে উত্তাল হয়েছে রাজ্য রাজনীতি।
অন্যদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর কথায় স্পষ্ট—এই সরকার মূলত আদিবাসী ও স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বার্থে জমি পুনরুদ্ধারে অটল অবস্থানে আছে। জমি, পরিচয় ও জনবসতির প্যাটার্ন নিয়ে আসামে ফের একবার আলোচনা চরমে উঠতে চলেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
সম্প্রতি জরুরি অবস্থার ৫০তম বার্ষিকীতে কংগ্রেসকে নিশানা করে হিমন্ত বিশ্ব শর্মা বলেছিলেন, “যারা একসময় সংবিধানকে শ্বাসরোধ করেছিল, আজ তারা-ই সংবিধানের রক্ষাকর্তা সাজছে।” সেই ধারাবাহিকতায় এবার ভূমি দখলের বিরুদ্ধে তাঁর অবস্থানকে তিনি এক ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ হিসেবেই ব্যাখ্যা করলেন।

