থানে, ৯ জুন:মহারাষ্ট্রের থানে জেলার মুম্ব্রা ও দিবা স্টেশনের মাঝখানে এক চলন্ত লোকাল ট্রেন থেকে পড়ে অন্তত দুইজন যাত্রীর মৃত্যু হয়েছে এবং ছয়জন গুরুতর আহত হয়েছেন। দুর্ঘটনাটি ঘটে চূড়ান্ত ভিড়ের সময়, যখন ট্রেনটি মুম্বাইয়ের ছত্রপতি শিবাজি মহারাজ টার্মিনাস (CSMT)-এর দিকে যাচ্ছিল।
সেন্ট্রাল রেলওয়ের চিফ পাবলিক রিলেশনস অফিসার ডঃ স্বপনিল নীলা জানান, “কাশারা-মুখী লোকাল ট্রেনের গার্ডের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, মুম্ব্রা ও দিবা স্টেশনের মাঝখানে আটজন যাত্রী ট্রেন থেকে পড়ে যান। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।”
প্রথমিক রিপোর্টে পাঁচজন নিহত হওয়ার খবর থাকলেও, রেলওয়ে প্রোটেকশন ফোর্স (RPF) নিশ্চিত করেছে যে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
নিহতদের মধ্যে একজনের নাম পরিচয় পাওয়া গেছে—আদেশ অনন্ত ভইর, যিনি শাহাপুর তালুকার আটগাঁও এলাকার বাসিন্দা।
আহতদের মধ্যে তুষার ভগত নামে এক যাত্রী জানান, তিনি টিটওয়ালা থেকে ট্রেনে উঠেছিলেন। “এক্সপ্রেস ট্রেনটা আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল। মুম্ব্রার কাছে বক্ররেখায় পৌঁছনোর সময়, যারা দরজার কাছে দাঁড়িয়েছিল, তারা হঠাৎ চাপে পড়ে যায়। বাঁচার জন্য তারা আমাদের ধরে ফেলেছিল, কিন্তু সবাই পড়ে যাই। এরপর কিছু মনে নেই,” বলেন তিনি।
রেল কর্মকর্তারা ধারণা করছেন, অতিরিক্ত ভিড় ও মুম্ব্রার বক্ররেখা এই দুর্ঘটনার প্রধান কারণ। স্থানীয় ও দূরপাল্লার ট্রেন, যেমন পুষ্পক এক্সপ্রেস, একই ফাস্ট লাইনে একে অপরের বিপরীত দিকে চলছিল। এমন সম্ভাবনা রয়েছে যে দুটি ট্রেনের মাঝখানে হালকা ধাক্কা লাগে, যা যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করে এবং এই দুর্ঘটনার সূত্রপাত ঘটে।
ঘটনার পর রেল বোর্ড মুম্বাই লোকাল ট্রেন ব্যবস্থায় জরুরি নিরাপত্তা সংস্কারের ঘোষণা দিয়েছে। রেল বোর্ডের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর (তথ্য ও প্রচার) দিলীপ কুমার বলেন, “মুম্বাই সাবার্বান নেটওয়ার্কের জন্য নির্মাণাধীন সব রেকে স্বয়ংক্রিয় দরজা বন্ধের সুবিধা থাকবে। যেসব রেক বর্তমানে চলছে, সেগুলিকেও পুনরায় ডিজাইন করে দরজা বন্ধের সুবিধা যুক্ত করা হবে।”
এই ঘটনার পর যাত্রী সংগঠনগুলো আবারও মুম্বাইয়ের লোকাল ট্রেনে দীর্ঘদিনের অতিরিক্ত ভিড় সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজ খোলার পরে যাত্রী চাপ বেড়ে যাওয়ায় অবিলম্বে নিরাপত্তামূলক পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি উঠেছে।

