বৈদ্যনাথ ভট্টাচার্য
মাছমারা, ৮ জুন : নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে অবশেষে বন্ধ করে দেওয়া হলো পেঁচারথল বিধানসভার মাছমারা লেদ্রাই দেওয়ান দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের নির্মাণ কাজ। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে চলমান এই স্কুল বিল্ডিংয়ের কাজটি গত ছয় মাস ধরে চলছিল। অভিযোগ উঠেছে, শাসকদল বিজেপিরই এক কর্মী এই কাজের বরাত পেয়েছিলেন।দীর্ঘদিন ধরেই এই নির্মাণ কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠছিল। স্থানীয়দের অভিযোগ, ইট, বালি, পাথর, সিমেন্ট এবং কংক্রিট ব্যবহারে সরকারি কোনো নিয়ম মানা হচ্ছিল না। বিশেষত, বালি ও সিমেন্টের মিশ্রণে কারচুপি এবং বিল্ডিংয়ের ওয়াল নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের ইটের ব্যবহার চোখে পড়ার মতো। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী ওয়াল নির্মাণে ফার্স্ট ক্লাস ইট ব্যবহারের কথা থাকলেও, এখানে তৃতীয় শ্রেণীর ইট ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে অভিযোগ।এলাকাবাসীর কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে বিজেপি দলের স্বশাসিত জেলা পরিষদের সদস্য স্বপ্নারানী দাস তার সঙ্গীদের নিয়ে লেদ্রাই দেওয়ান স্কুলে ছুটে যান। নির্মাণ কাজ ঘুরে দেখার পর তিনি অবিলম্বে কাজটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। বর্তমানে কাজ বন্ধ রয়েছে।স্বপ্নারানী দাস এই বিষয়ে বলেন, “দীর্ঘদিন যাবৎ মাছমারা লেদ্রাই দেওয়ান স্কুলের একটি বিল্ডিংয়ের কাজে বিভিন্ন নিম্নমানের কাজের অভিযোগ উঠে আসছে। তাই আজ এলাকার জনগণকে নিয়ে দেখতে যাই এবং অতি নিম্নমানের কাজ করে আমাদের সরকারকে বদনাম করা যাবে না। তাই আপাতত এই কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেই।”অনুসন্ধানে জানা গেছে, মাছমারা পেঁচারথল এলাকায় সরকারি যে সমস্ত কাজকর্ম হচ্ছে, সেগুলিতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অনিয়ম পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাস্তা নির্মাণ থেকে বিল্ডিং নির্মাণ—সব ক্ষেত্রেই “পুকুর চুরি” নয়, যেন “সাগর চুরি” চলছে বলে অভিযোগ। এরই মধ্যে কাঞ্চনপুরের শুকনা ছড়ায় আরেকটি নির্মাণ কাজের অনিয়ম ধরা পড়ার কারণে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।এই ঘটনা শাসকদলের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং এলাকার জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে। সরকারি নির্মাণ কাজে এই ধরনের দুর্নীতি বন্ধে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

