গুয়াহাটি, ৮ জুন: আসামে চলতি বছরের বন্যা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতির দিকে যাচ্ছে। এখনো পর্যন্ত রাজ্যের ১২টি জেলার প্রায় ৩.৩৭ লক্ষ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ও জনসংখ্যা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে বলে জানিয়েছে রাজ্য প্রশাসন।
সরকারি বুলেটিন অনুযায়ী, এ বছরের বন্যা ও ভূমিধসে মোট মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩-এ, যার মধ্যে ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে ভূমিধসে।
ব্রহ্মপুত্র সহ বেশ কয়েকটি বড় নদীর জলস্তর কমছে, তবে কিছু নদী এখনও বিপদসীমার ওপরে বইছে। ধুবড়িতে ব্রহ্মপুত্র, ধর্মতুলে কপিলি, বিপি ঘাটে বারাক এবং শ্রীভূমিতে কুশিয়ারা নদী শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিপদসীমার ওপরে ছিল।
এই পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে গত সপ্তাহ থেকে বন্ধ থাকা ফেরি পরিষেবা রবিবার আংশিকভাবে চালু করা হবে বলে জানিয়েছে অভ্যন্তরীণ জল পরিবহণ বিভাগ। গুয়াহাটি–মধ্যম খণ্ড ফেরি পরিষেবা আপাতত গৌহাটি রাজাদুয়ার ফেরি ঘাট থেকে চালু করা হবে। উত্তরের তীরের অ্যাপ্রোচ রোড পুনর্নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত এই অস্থায়ী ব্যবস্থা চালু থাকবে।
গুয়াহাটি–কুরুয়া ফেরি পরিষেবা সোমবার থেকে চালু হবে। তবে গৌহাটি অঞ্চলে কাঠের নৌকা চলাচল এখনও নিষিদ্ধ থাকবে। পরিস্থিতি পর্যালোচনার পরই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
বর্তমানে রাজ্যের ১২ জেলার ৪১টি সার্কেল ও ৯৯৯টি গ্রামের ৩,৩৭,৩৫৮ জন মানুষ এখনও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে শ্রীভূমি জেলায়, যেখানে ১.৯৩ লক্ষ মানুষ বন্যার কবলে। হাইলাকান্দিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৭৩,৭২৪ জন এবং কাছারে ৫৬,৩৯৮ জন মানুষ এখনো জলের তলায়।
রাজ্যে এখনো পর্যন্ত ১৩৩টি ত্রাণ শিবিরে ৩৬ হাজারেরও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া ৬৮টি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র চালু রয়েছে।
বন্যার জেরে রাজ্যের ১২,৬৫৯ হেক্টর কৃষিজমি এখনো জলের তলায়। শহরাঞ্চলেও বন্যা পরিস্থিতি এখনও বিদ্যমান, দুটি জেলায় ‘আরবান ফ্লাড’ পরিস্থিতিতে রয়েছে প্রায় ২৮৪ জন।
কাজিরঙা জাতীয় উদ্যান ও পবিতোরা অভয়ারণ্যও বন্যার জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বন বিভাগের কর্মকর্তারা।

