শিলচর (অসম), ১৩ এপ্রিল (হি.স.) : ওয়াকফ সংশোধিত আইনের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্ৰতিবাদের নামে শিলচরের কয়েকটি এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়েছে। মুসলিম সংগঠনের ডাকে শত শত মানুষ রাস্তায় নেমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর চেষ্টা করেন সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে। প্রতিবাদকারীদের ক্ষান্ত করতে গেলে পুলিশকে লক্ষ করে বেজায় পাথর ছোঁড়া হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং প্রতিবাদকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে মৃদু লাঠিচার্জ করেছে পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনী।
আজ রবিবার সকালে ওয়াকফ সংশোধিত আইনের বিরুদ্ধে শতাধিক মুসলমান জনতার জমায়েত ঘটে শিলচরের বেরেঙ্গা নিউরোড পয়েন্টে। সেখান থেকে হাতে হাতে প্ল্যা-কার্ড নিয়ে প্রতিবাদী জনতা ধৰ্মীয় স্লোগান দিয়ে শীঘ্ৰ ‘ইসলাম-বিরোধী’ সংশোধিত ওয়াকফ আইন প্ৰত্যাহারের দাবি তুলেন। এই আইন প্রত্যাহার করা না হলে দেশব্যাপী তাঁদের আন্দোলন তীব্রতর করার হুংকার দেওয়া হয়। মিছিলটি চামড়া গুদাম, বেরেঙ্গা, পুরাতন লক্ষ্মীপুর রোড এলাকায় আসে। ইতিমধ্যে মিছিলে পা মেলান শত শত মুসলমান জনতা। মিছিলটি শিলচর শহরের দিকে অগ্রসর হতে থাকে।
এদিকে পুরাতন লক্ষ্মীপুর রোড, ওয়াটার ওয়ার্কস রোড, কালীবাড়ি রোড, ফাটক বাজার সহ একাধিক স্থানে ব্যারিকেড গড়ে তুলে পুলিশ। তা সত্ত্বেও মিছিলে অংশগ্রহণকারীরা জোরজবরদস্তি ব্যারিকেড ভেঙে এবং টপকে অগ্ৰসর হওয়ার চেষ্টা করে। তখন কয়েক জায়গায় পুলিশের সঙ্গে ঠেলাধাক্কা, ধস্তাধস্তি হয়। এক সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয় প্রতিবাদকারীরা।
চামড়া গুদাম এলাকায় বিক্ষোভকারীদের আরেকটি দল আগের মিছিলে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যায়। বাঁশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীর মানব ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। তখন সরাসরি সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। কোনওভাবে বিক্ষোভকারীদের নিয়ন্ত্ৰণে আনা যাচ্ছে না দেখে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ।
এদিকে পুরাতন লক্ষ্মীপুর রোডে আবারও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ভাঙা ইট, পাথর ছুঁড়েছে। তখন রাজ্য পুলিশ ও সিআরপিএফ ফের লাঠিচার্জ করে।
পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে জেলা প্রশাসন। অ্যাডিশনাল ডিস্ট্ৰিক্ট কমিশনার অন্তরা সেন, সাউদার্ন রেঞ্জের ডিআইজি কঙ্কনজ্যোতি শইকিয়া ঘটনাস্থলগুলিতে ছোটাছুটি করছেন। এছাড়া প্রতিবাদকারীদের অগ্রযাত্রা ঠেকাতে কাছাড়ের পুলিশ সুপার নুমাল মাহাতো, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুব্রত সেন এবং অন্যান্য ঊর্ধ্বতন পুলিশ আধিকারিক জানিগঞ্জ, সদর থানা রোড এবং দেওয়ানজি বাজারের ব্যস্ততম সংযোগস্থল কালীবাড়ি পয়েন্টে অবস্থান করেন। জায়গায় জায়গায় মোতায়েন করা হয়েছে সিআরপিএফ এবং কমান্ডো ব্যাটালিয়নের বিশাল বাহিনী।
পুলিশ সুপার নুমাল মাহাতো জানান, এ মুহূৰ্তে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণাধীন। বিভিন্ন এলাকায় পুলিশ ও সিআরপিএফ টহল দিচ্ছে।

