কলকাতা, ১৩ ডিসেম্বর (হি.স.): গ্রেফতারের ৯০ দিন পরেও চার্জশিট দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই। শুক্রবার আর জি কর মামলায় শর্তাধীনে জামিন পেয়ে গেলেন প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল। জামিন মঞ্জুর করলেন শিয়ালদহ আদালতের বিচারক। জামিন পেলেও এখনই জেল থেকে বার হতে পারবেন না সন্দীপবাবু।
চিকিৎসক-পড়ুয়ার খুন এবং ধর্ষণের মামলায় প্রমাণ লোপাটের অভিযোগ ছিল তাঁদের বিরুদ্ধে। গত ৯ ডিসেম্বর নির্দেশ মেনেই আদালতে হাজির হয়েছিলেন সন্দীপবাবু ও অভিজিৎবাবু। আদালতে সন্দীপ ঘোষের আইনজীবী দাবি করেছিলেন গ্রেফতারের পর ৮৬ দিন কেটে গেছে। এখনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে কোনও শক্তপোক্ত প্রমান পেশ করা হয়নি। সে কারণে তাঁকে জামিন দেওয়া হোক। কিন্তু ওই দিন আদালত নির্দেশ দেয় ১৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জেল হেফাজতেই থাকতে হবে তাঁদের।অভিজিৎবাবুর আইনজীবী তখন বলেন, তদন্তকারীরা তাঁর মক্কেলকে প্রমান লোপাটের কারণে গ্রেফতার করলেও সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরির রিপোর্ট হাতে এলেও তা আদালতে পেশ করা হয়নি। যদিও সিবিআই সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে আদালতকে স্পষ্ট সেদিন জানায়, তদন্তের স্বার্থে ০ ঘণ্টার ভিডিও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, ‘ইট ইস নট আ ম্যাটার অফ জোক’।
শুক্রবার শিয়ালদহ আদালতে এই মামলার শুনানির সময়ে সন্দীপ ঘোষ এবং অভিজিৎ মণ্ডলকে নতুন করে হেফাজতে চায়নি সিবিআই। ২০০০ টাকা বন্ডের বিনিময়ে জামিন পেয়েছেন উল্লেখিত দুই অভিযুক্ত। আর জি কর হাসপাতালে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগেও সন্দীপবাবুকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই।
অভিজিতবাবুর বিরুদ্ধে অন্য কোনও মামলা নেই। তাই তিনি জেল থেকে বার হতে পারবেন। তবে যখন থানায় ডাকা হবে, তখনই যেতে হবে তাঁকে। সিবিআই জানিয়েছে, মামলার তদন্ত চলছে এবং চার্জশিট প্রস্তুতির জন্য আরও সময় প্রয়োজন। তবে জামিনপ্রাপ্ত অভিযুক্তরা তদন্তে সহযোগিতা করবেন বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।
গত ৯ আগস্ট আর জি কর মেডিক্যালে তরুণী চিকিৎসক খুন ও ধর্ষণের ঘটনায় প্রবল আলোড়ণ হয়। হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ ও টালা থাকার প্রাক্তন ওসি অভিজিৎ মণ্ডল গ্রেফতার হন ১৪ সেপ্টেম্বর রাতে। ঢাক-ঢোল বাজিয়ে উৎসবে মেতেছিল সাধারণ মানুষ। সেই রাতে রাত দখলের কর্মসূচিতে গ্রেফতারির খবর পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় উদযাপন। ঢাক-ঢোল-শঙ্খ বাজিয়ে উৎসবে মাতেন সাধারণ মানুষ।
অন্যদিকে, অভিজিৎবাবু গ্রেফতার হতেই পুলিসের মাঝারি ও নিচু মহলের একাংশে রীতিমতো ক্ষোভ ছড়ায়। ফেসবুকের ডিপি কালো করে দেন ইনস্পেক্টর এবং সাব-ইনস্পেক্টরদের অনেকে। দিন তিন বাদে নিয়ম মেনেই সাসপেন্ড করা হয় অভিজিৎবাবুকে। সন্দীপ ঘোষ ও অভিজিৎ মণ্ডল সেই সময় রীতিমত ‘ঘৃণ্য অপরাধী’। শুক্রবার তাঁরা আর জি কর-এর হতাকাণ্ডে জামিন পাওয়ায় স্বভাবতই হতবাক প্রতিবাদীদের একটা বড় অংশ।