আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর : সমাজদ্রোহীর বিরুদ্ধে রাস্তায় আন্দোলনে নামলো আমতলী থানাধীন চৌমুহনি বাজারের ব্যবসায়ীগণ সহ এলাকার দুই পঞ্চায়েতে প্রধান- উপপ্রধান ও এলাকাবাসী। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে চৌমুহনি বাজার এলাকায় দেখা দেয় তীব্র উত্তেজনা।
সমাজদ্রোহির কার্যকলাপে অতিষ্ট হয়ে আন্দোলনে নামলেন সূর্য্যমণিনগর এলাকাবাসী। বাম আমলের কুখ্যাত সমাজদ্রোহী মানিক দাসকে অতি শীঘ্রই এলাকা ও বাজার ছাড়া করার উদ্দেশ্যে বুধবার সকালে আগরতলা বিশালগড় সড়কে আন্দোলনে নামেন এলাকার একাংশ মানুষ। আন্দোলনে অংশ নেন সূর্য্যমনিনগর পঞ্চায়েত এবং চৌমুহনী বাজার পঞ্চায়েতের প্রধান ও উপপ্রধান সহ এলাকার প্রমিলা বাহিনী। এছাড়াও ছিলেন চৌমুনী বাজার কমিটির সকল সদস্য সহ বাজারের ব্যবসায়ীগণ।
আন্দোলনকারীদের দাবি, বাজারের নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী, অপপ্রচারকারী, মামলাবাজ, সমাজদ্রোহী, নারী নির্যাতনকারী বাম আমলের কুখ্যাত সমাজদ্রোহী, কুখ্যাত বনদুস্য মানিক মালাকার দাস ওরফে মানিক দাস কে দ্রুত এলাকা ও বাজার ছাড়া করতে হবে।
ঘটনার বিবরণের জানা গেছে, বাম আমলের কুখ্যাত সমাজদ্রোহী মানিক মালাকার উরফে মানিক দাস সূর্যমনি নগর এলাকার বাসিন্দা। বেশ কিছুদিন পূর্বে এই সমাজদ্রোহী চৌমুহনি বাজারে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরের জায়গা ভুয়া পর্চার মাধ্যমে জোর জবরদস্তি দখল করার চেষ্টা করে। কিন্তু উৎসব কমিটির সহ চৌমুহনি বাজার ব্যবসায়ীগণ তাতে বাধা দেয়।
বিগত কিছু বছর পূর্বে স্বর্গীয় বসন্ত কুমার রায় চৌমুহনী বাজারে শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দির নির্মাণ করার লক্ষ্যে কাগজ পত্র তৈরি করে দেড় গন্ডা জায়গা উৎসব কমিটিকে দান করেছিলেন। বসন্ত কুমার রায়ের মৃত্যুর পর ওই জায়গা প্রশাসনের দুর্নীতিগ্রস্ত কিছু অফিসারদের হাতে তুলে দেয় মানিক মালাকার দাস। জমির ভূয়া পর্চা বের করে ওই জায়গাটি দখল করার চেষ্টা করায় উৎসব কমিটি পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসক ডক্টর বিশাল কুমারের দ্বারস্থ হয়। তখন জেলাশাসক মানিক মালাকার দাসের পর্চাটি বাতিল করেন এবং পর্চাটি তৈরি করার কাজে জড়িত দুর্নীতিবাজ অফিসারদের শাস্তি প্রদান করেন।
এদিকে বাম আমলে সমাজদ্রোহী মানিক এর বিরুদ্ধে ধর্ষনের অভিযোগও ছিল, যার কারণে সে ছয় মাস জেলে কাটিয়ে এসেছিল। জন্য যায়, জেল থেকে বেরিয়ে মানিক মালাকার দাস তার নাম পরিবর্তন করে মানিক দাস করেন। মানিকের বিরুদ্ধে চৌমুহনি বাজারে একাধিক দোকানঘর জোরপূর্বক দখল করে ভাড়া না দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে। কোন ব্যবসায়ী যদি তার বিরুদ্ধে কথা বলে সেই বিভিন্নভাবে মামলা-মোকদ্দমা ফাসিয়ে দেয়। অন্যদিকে, মানিক মালাকার দাস চৌমুহনি বাজার কমিটি এবং শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ মন্দিরের উৎসব কমিটির নামে সামাজিক মাধ্যমে মিথ্যা অপপ্রচার ছড়িয়েছিল। এজন্যই এই সমাজদ্রোহীর বিরুদ্ধে সরব হলেন দুটি পঞ্চায়েতের জনগণ সহ চৌমুহনি বাজার ব্যবসায়ীগণ।
এদিনের এই আন্দোলনে উপস্থিত ছিলেন সূর্য্যমনি নগর পঞ্চায়েতের প্রধান উত্তম রায়,চৌমুহনী বাজার পঞ্চায়েতের প্রধান শম্পা সাহা, উপপ্রধান নিরঞ্জন সিনহা, এছাড়াও ছিলেন চৌমুহনী বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি গোপাল সাহা, সম্পাদক কৃষ্ণকান্ত রায়, চৌমুহনী বাজার ইয়ং ব্লাক ক্লাব সম্পাদক অভিজিৎ সাহা, শ্রী শ্রী রাধা গোবিন্দ উৎসব কমিটির সম্পাদক পীযূষ কান্তি পাল, সভাপতি শ্যামল ভট্টাচার্য, রঞ্জিত কুমার সাহা বিশিষ্ট সমাজসেবী, সূর্য্যমনি নগর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য নারায়ন চক্রবর্তী, সহ দুই পঞ্চায়েতের সমস্ত প্রমীলারা।
আন্দোলনের দিন সভায় বাজার কমিটির সম্পাদক পীযুষ কান্তি পাল বলেন, মানিক দাস কে বাজার ছাড়া করাতে গিয়ে একাধিকবার আমতলী থানায় ডেপুটেশন দেওয়া হয়েছিল; কিন্তু থানার কিছু অফিসারদেরকে টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করে সমস্ত মামলা-মোকদ্দমা থেকে পার পেয়ে যায় মানিক মালাকাল দাস। তাই রাজ্য প্রশাসন এই বিষয়ে দ্রুত হস্তক্ষেপ করা জরুরি। তবেই বাম আমলের কুখ্যাত সমাজ বিদ্রোহীর হাত থেকে সমাজকে রক্ষা করা যাবে। সকলের সম্মুখে এমনটা দাবি করেন তিনি।