আগরতলা, ২৮ নভেম্বর : আজকের শিশু ও কিশোর-কিশোরী হচ্ছে আগামী দিনের দেশের কান্ডারী। তাই তাদের সুস্থ এবং সবলভাবে গড়ে তুলতে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব- সুস্থ কৈশোর অভিযানের সূচনা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শিশু ও কিশোর কিশোরীদের সুস্থ ও সবল ভাবে গড়ে তুলতে অগ্রাধিকার দিয়েছেন। রাজ্য সরকারও প্রধানমন্ত্রীর মার্গদর্শনে কাজ করছে। রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযানের সপ্তম (৭.০) পর্যায়ে ১০০ শতাংশ সাফল্য এসেছে।
রাজ্যে ২০২৪ সালের ২৪ অক্টোবর থেকে ৬ নভেম্বর পর্যন্ত এই অভিযান চলেছে। কৃমি সংক্রমণ, ভিটামিন এর অভাবে শৈশবে ডায়রিয়া, আয়রন এবং ফলিক এসিডের অভাব মানব স্বাস্থ্যের পক্ষে উদ্বেগজনক। শিশু এবং কিশোর-কিশোরীদের রক্তাল্পতা দূর করতে এবং শারীরিক এবং মানসিক বিকাশে এই অভিযান একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এই অভিযানে শূন্য থেকে ১৯ বছর বয়সের শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের বিভিন্ন প্রতিরোধক ট্যাবলেট খাওয়ানো হয় এবং ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। রাজ্যের ১১ লক্ষ ৩৬ হাজার ৮৩ জন শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের এই অভিযানের আওতায় আনা হয়েছে। রাজ্যে এই অভিযান শুরু হয়েছিল ২০২১ সাল থেকে। প্রথম বছর থেকে রাজ্যে স্বাস্থ্য দপ্তরের তৎপরতায় এই কর্মসূচিতে বিশেষ সাফল্য এসেছে। এই অভিযানে ১০০ শতাংশ সাফল্য আনার লক্ষ্যকে অগ্রাধিকার দিয়ে দফতর কাজ করেছে। এই অভিযানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান- যেমন স্কুল, কলেজ অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্র, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ডিগ্রী কলেজ, আইটিআই/ কারিগরি শিক্ষাকেন্দ্র এবং অন্যান্য শিক্ষাকেন্দ্রে ছেলে-মেয়েদের ওষুধ দেওয়া হয়।
মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযানে রাজ্যের আশা কর্মীরা মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন। এই অভিযানে একটি শিশুও যেন বাদ না পরে সে দিকে লক্ষ্য রেখে কাজ করে গেছেন। সেই সঙ্গে তারা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ছেলে-মেয়েদের ওষুধ বিতরণ করেছেন। রাজ্যের বিভিন্ন চা বাগান, ইটভাট্টা, বস্তি এলাকা এমনকি অনাথ আশ্রম এবং বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাকেন্দ্রে ক্যাম্প সংগঠিত করে ছেলেমেয়েদের ওষুধ বিতরণ করেছেন।
মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযানের সপ্তম (৭.০) পর্যায়ে শূন্য থেকে ১৯ বছর বয়সের শিশু এবং কিশোর কিশোরীদের আয়রন ফলিক ওষুধ এবং ভিটামিন এ সম্পূরক খাওয়ানো হয়। ওআরএস এর প্যাকেট বিতরণ করা হয়। কিশোর কিশোরীদের টিডিটেন ভ্যাকসিন এবং টি ডি সিক্সটিন ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। পোষণ কর্মসূচির অন্তর্গত ছেলেমেয়েদের ওজন পরিমাপ করা হয়। নিউমোনিয়ার লক্ষণ বৃদ্ধি (সাঁস) সচেতনতামূলক কর্মসূচি সংঘটিত করা হয়েছে। এই অভিযানে একইিউট ফ্ল্যাসিড প্যারালাইসিস সারভাইলেন্স (পোলিও) কর্মসূচিতে ছেলেমেয়েদের সনাক্ত করা হয়। হাম রুবেলা সনাক্তকরণ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। কিশোরী গর্ভবতী মহিলাদের সনাক্ত করা হয়েছে। মাতৃদুগ্ধ পান এর গুরুত্বের উপর কাউন্সিলিং সেশন করা হয়েছে। সেইসঙ্গে হোম বেইসড ইয়ং চাইল্ড কেয়ার কর্মসূচিতে শিশুদের সনাক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান ১.০-এ (১-১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১) রাজ্যের সাফল্য ছিল ৯৯.৪০ শতাংশ। এরপর পর্যায়ক্রমে মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান ২.০-এ (২১-৩১ মার্চ, ২০২২) রাজ্যের সাফল্য ৯৩.৫৬ শতাংশ, মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান ৩.০-এ (৫-১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২) রাজ্যের সাফল্য ৯৬.৯৭ শতাংশ, মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান ৪.০-এ (২০-৩১ মার্চ, ২০২৩) রাজ্যের সাফল্য ৯৭.৪৪ শতাংশ, মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান ৫.০-এ (১৯ সেপ্টেম্বর-৩ অক্টোবর ২০২৩) রাজ্যের সাফল্য ৯৮.৯৬ শতাংশ, মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান ৬.০-এ (৯-২২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪) : রাজ্যের সাফল্য ৯৭.৯৭ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রী সুস্থ শৈশব সুস্থ কৈশোর অভিযান ৭.০-এ (২৪ অক্টোবর- ৬ নভেম্বর, ২০২৪) রাজ্যের সাফল্য ১০০ শতাংশ।