ইমফল, ১২ নভেম্বর (হি.স.) : জিরিবাম জেলার অন্তৰ্গত বড়বেকরা থানা এবং সিআরপিএফ পোস্ট সংলগ্ন জাকুরাধর করোং-এ গতকাল (সোমবার) বন্দুকযুদ্ধের পর নিখোঁজ তিন মহিলা এবং তিন নাবালক সহ মোট ছয় সাধারণ নাগরিকের সন্ধানে জোরদার তালাশি অভিযান চালিয়েছে পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী।
আজ মঙ্গলবার রাজ্য পুলিশের সদর দফতরে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে গতকাল সংঘটিত সহিংসতার বর্ণনা দিচ্ছিলেন আইজিপি (অপারেশনস) আইকে মুইভা। গতকালে ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ আখ্যা দিয়ে আইজিপি বলেন, গুলি বর্ষণ বন্ধ করতে নিরাপত্তা বাহিনীর সতর্কতা উপেক্ষা করে জঙ্গিরা হামলা না থামিয়ে পাল্টা আক্রমণ করে। তখন নিরাপত্তা বাহিনী বাধ্য হয়ে যুদ্ধংদেহী রূপ ধারণ করে। প্রায় ৪৫ মিনিট উভয় পক্ষের মধ্যে তীব্র সংঘর্ষ হয়।
এতে একজন সিআরপিএফ অফিসার আহত হওয়ার পাশাপাশি ১০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি বড়বেকরা থানায় গড়া ত্রাণ শিবিরে আশ্রিত দুই অসামরিক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
আইজিপি (অপারেশনস) আইকে মুইভা জানান, ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ হয়েছিলেন আটজন। তাদের মধ্যে আজ সকালে দুজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। এখনও যারা নিখোঁজ তাঁরা ইউরেম্বাম রানি (৬০), তেলিম থোইবি দেবী (৩১), তাঁর মেয়ে তেলেম থাজামানবি দেবী (৮), লাইশরাম হেইতোম্বি দেবী (৩৫), তাঁর দুই ছেলে লাইশরাম চিংখেইঙ্গানবা সিং (২.৫ বছর) ও লাইশরাম লামনগানবা। সিং (১০ মাস)। হামলার সময় তাঁরা ত্রাণ শিবিরে অবস্থান করছিলেন।
তিনি নিশ্চিত করেছেন, জিরিবাম জেলার স্পর্শকাতর এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যায় যৌথ নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়া পুলিশ ও নিরাপত্তা বাহিনী নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে নিরলসভাবে প্রচেষ্টা চালিয়েছে। আইজিপি মুইভা জানান, ‘হামলার ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা নিখোঁজদের খুঁজে বের করতে এবং এলাকায় নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
সংঘর্ষে নিহতরা অসামরিক সাধারণ নাগরিক ছিলেন বলে কুকি-ভিত্তিক বিভিন্ন সংস্থার দাবি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে আইজিপি মুইভা তাদের দাবিকে অস্বীকার করে বলেন, উদ্ধারকৃত অস্ত্রশস্ত্র এবং নিহতদের পোশাকই প্রমাণ করে তারা জঙ্গি ছিল। তিনি জানান, মৃতদেহগুলির পাশ থেকে উদ্ধার হয়েছে তিনটি একে সিরিজের রাইফেল, চারটি সেলফ-লোডিং রাইফেল (এসএলআর), দুটি ইনসাস রাইফেল, একটি একটি রকেট চালিত গ্রেনেড (আরপিজি), একটি পাম্প-অ্যাকশন বন্দুক, কয়েকটি বিপি হেলমেট এবং বেশ কয়েকটি ম্যাগাজিন সহ অস্ত্র ও গোলাবারুদ।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বড়বেকরা থানার ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নিয়েছেন ১৩ জন। তাঁদের মধ্যে ছয়জন নিখোঁজ, পাঁচজনকে উদ্ধার করা হয়েছে এবং হামলায় দুজন নিহত হয়েছেন।