কলকাতা, ৩১ অক্টোবর (হি.স. ) : পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না থেকে যেতে সদর মহকুমার অন্তর্গত উচালন গ্রামের ব্রাহ্মণপাড়ার কালীপুজো ৩৫০ বছরের প্রাচীন। এই পুজোর প্রতিটি পরতে জড়িয়ে রয়েছে দৈব মহিমা ও নানান অজানা কাহিনী। প্রতিমাকে সাজানো থেকে শুরু করে গয়নাতে অলংকৃত করে চূড়ান্ত রূপদান করেন শরিকরা। মায়ের মুখ তৈরি হয় শিল্পীর হাতে তবে ছাঁচে ঢালাইয়ের মুখ নয়। এখনও বলিদান প্রথা চালু রয়েছে। এই গ্রামের উপর দিয়ে মা সারদা তাঁর জয়রামবাটির বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন। তখন নাম ছিল ওচালঙ, সময়ের সঙ্গে তা বদলে হয়েছে উচালন। লোকশ্রুতি, গ্রামের এক বাড়িতে মা সারদার রাতে বিশ্রাম নেওয়ার কথাও বর্ণিত ইতিহাসের পাতায়। গ্রামের মানুষের মুখে তা ফিরে ফিরে আসে কান পাতলে মায়ের অনেক অতীত পৌরাণিক কাহিনী জানার সুযোগ রয়েছে। পুজোর সময়কালে একবার রামায়ণ গান চলাকালীন সময়ে জনৈক এক মহিলাকে উপস্থিত থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা।কিন্তু পরে সেই মহিলার আর কোনও সন্ধান মেলেনি। অকথিত নানান ঘটনা, এক শরিকের কন্যা চলতে হাঁটতে পারতেন না। মায়ের কাছে মানসিক রাখে যা অধিক পরিচিত এবং চলতি কথায় যাকে বলে – “মানত” করার পর সে দাঁড়াতে ও চলতে শিখে যায়। এমন অনেক চিরন্তন সত্য ও দৃঢ় ও অগাধ বিশ্বাস এই পুজোকে ঘিরেই বর্তমান। কৃষ্ণনগর থেকে প্রতিমার সাজ আনেন শরিকি পরিবারের সদস্যরা। তাদের পরিবারের অন্যান্যরা কলকাতায় থাকেন। মা’য়ের কৃপাতেই হয়েছে এই বিশ্বাস । কারণ তাদের দিয়ে মা নিজের সব কাজ করিয়ে নেন। মূর্তি নির্মাণে শিল্পী বদল হয় না। পারিবারিকভাবেই পুজো হয় এবং তান্ত্রিক মতে। রাতভর চলে পুজো পাঠ। জৌলুস নয় পুজোর সবচেয়ে আকর্ষণ – নিষ্ঠা, ভক্তি ও ঐতিহ্য। গ্রামবাসীরা পুজোর মণ্ডপে। তন্ত্রধারক বিনয় মুখার্জী বলেন, মায়ের মহিমার নেই তুলনা। পুজোর আসনে বসে সে কথা দিব্যিই অনুভব করেন তিনি ।