BRAKING NEWS

বাংলাদেশের হিন্দুরা আর ভিতু নন, দেশ ছেড়ে না পালিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা করছেন : ভিএইচপি

ভারত এক নম্বর হবে, বিশ্বাস করে নিয়েছে বিশ্ব, বলেছেন বিশ্বহিন্দু পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. সুরেন্দ্রগুয়াহাটি, ২৮ অক্টোবর (হি.স.) : বাংলাদেশের হিন্দুরা আর ভিতু নন, দেশ ছেড়ে না পালিয়ে সাহসিকতার সঙ্গে মোকাবিলা করছেন দুর্বৃত্ত তথা মৌলবাদীদের, বলেছেন বিশ্বহিন্দু পরিষদ (ভিএইচপি)-এর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. সুরেন্দ্র জৈন।

আজ সোমবার গুয়াহাটির উলুবাড়িতে বড়ঠাকুর মিল রোডে অবস্থিত ভিএইচপির উত্তর-পূৰ্বাঞ্চলের সদর দফতর পঞ্চজন্য ভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য পেশ করছিলেন ড. সুরেন্দ্র জৈন। জৈন বলেন, এক সময় বাংলাদেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ ছিলেন হিন্দুরা, আজ তা করুণ অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছ। নানা ধরনের অত্যাচার সত্ত্বেও হিন্দুরা এখন আর কাঁদেন না, সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আর পলায়ন নয়, সাহসের সাথে দুর্বৃত্তদের মোকাবিলা করতে হবে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যেখানে হিন্দুদের সংখ্যা কমবে সেখানে কী হবে তা বাংলাদেশের দিকে তাকালেই বোঝা যায়। আজও হিন্দুরা টার্গেট।

ড. সুরেন্দ্র বলেন, বাংলাদেশের হিন্দু সংগঠনের আহ্বানে ভারতে বিশ্বহিন্দু পরিষদ হেল্পলাইন নম্বর জারি করেছে। বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায় সমস্যায় পড়েছেন বলে তথ্য পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা ভারত সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করব।

বাংলাদেশে জিহাদি মানসিকতার ওপর আক্রমণ করে তিনি বলেন, জিহাদি মানসিকতার মানুষ সংবিধান বিশ্বাস করে না। তারা আদালত ঘেরাও করে বিচারক বদল করেছে, এখন তারা রাষ্ট্রপতিকে অপসারণের চেষ্টা করছে। এরা কোনও কিছুতেই বিশ্বাস করে না। এ থেকে ভারতকে শিক্ষা নিতে হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে বিশ্বহিন্দু পরিষদের অখিল ভারতীয় শীর্ষ পদাধিকারী বলেন, ‘লোকাল ফর ভোকাল’-এর জন্য সমাজকে অঙ্গীকার করতে হবে। কেবল সরকারের ওপর নির্ভর করলে হবে না। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে প্রচুর প্রতিভা রয়েছে, প্রত্যেককে তাদের জিনিস কিনতে উৎসাহিত করতে হবে। এ প্ৰসঙ্গে তিনি দীপাবলিতে চিনা পণ্য বিক্রি বন্ধ এবং ক্ৰয় করতে বারণ করে সবাইকে একত্রিত হয়ে স্থানীয় পণ্য কেনার আহ্বান জানিয়েছেন।

সবাইকে শুভ দীপাবলির শুভেচ্ছা জানিয়ে সুরেন্দ্র জৈন বলেন, আমরা ভগবান শ্রীরামের কাছে প্রার্থনা করি, ভারত বিশ্বের সর্বোচ্চ শিখরে বসে থাকুক। অযোধ্যায় রামলালার প্রাণ প্রতিষ্ঠার পর এটাই প্রথম দীপাবলি, তাই এবারের দীপাবলির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। ৫০০ বছর সংগ্রামের পর আজ আমরা এই দিনটি দেখার সৌভাগ্য অর্জন করেছি। সর্বোচ্চ আদালতের সিদ্ধান্তে এটা সম্মানজনকভাবে মর্যাদার সঙ্গে হয়েছে, কারণ ভগবান স্বয়ং মর্যাদা পুরুষোত্তম। বনবাসের পর দীপাবলিতে অযোধ্যায় আসেন ভগবান। এর পর প্রতিষ্ঠিত হয় রামরাজ্য। আমাদের চেষ্টা, হিন্দু-বিরোধী এবং দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে দেশে রামরাজ্য প্রতিষ্ঠা করা। আমরা চাই ঈশ্বর যেন প্রতিটি হৃদয়ে বাস করেন। প্রত্যেক ভারতীয়ের চরিত্র যেন রামের মতো হয়, এটাই আমাদের প্রচেষ্টা। আমাদের দেশের শিকড় রামে। গোটা বিশ্ব আজ তার শিকড়ে ফিরে যাচ্ছে। আমরা আমাদের শিকড়ে ফিরে যাচ্ছি, সে কারণেই ভারত দ্রুত বিকাশ করছে।

প্ৰসঙ্গক্ৰমে তিনি বাবা সাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের নাম নিয়ে বলেন, আমরা চাই সংবিধানের পরিধির মধ্যেই সমস্ত সমস্যার সমাধান হোক।

তিনি বলেন, আজ ভারত পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ, সামরিক ক্ষেত্রে তৃতীয় এবং মহাকাশে তৃতীয় স্থানে রয়েছে। বর্তমান বিশ্ব বিশ্বাস করছে, ভারত এক নম্বরে পরিণত হবে। বর্তমান সময়কে তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য স্বর্ণালী সময় বলে অভিহিত করেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার ধ্রুপদী ভাষার তালিকায় অসমিয়াকে অন্তর্ভুক্ত করে অসমিয়া ভাষাকে সম্মানিত করেছে, এটা সমগ্র অসমিয়া সমাজের অধিকার।

দেশকে বলার এবং শেখানোর অনেক কিছু আছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। তিনি বলেন, আগে অন্যান্য রাজ্যের গল্পকাররা এখানে আসতেন। সম্প্রতি অসমের এক মেয়ে দিল্লিতে গিয়ে গল্প পড়েছেন, এটা সবার জন্য গর্বের বিষয়।

ভিএইচপি-র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. সুরেন্দ্র জৈন বলেন, নতুন ভাবনার জন্য পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ১৪৫টিরও বেশি উপজাতি আছে, তবুও এখানে ঐক্য, বৈচিত্র্য ও বিবিধতার মধ্যে একতা। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইতিহাস মহাভারত ও রামায়ণ যুগের।

সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন বিশ্বহিন্দু পরিষদের ক্ষেত্র সংগঠন মন্ত্রী ড. দীনেশ তিওয়ারি, ভিএইচপি-র উত্তর-পূর্বাঞ্চল প্রান্ত সভাপতি পরমেশ দত্ত প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *