কলকাতা, ২২ অক্টোবর (হি.স.): দানার অজানা আশঙ্কায় মঙ্গলবার থেকে কলকাতা শহরের বিভিন্ন প্রান্তে শুরু হয়ে গেল পুর-প্রস্তুতি। ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’র দাপটে বৃহস্পতি এবং শুক্রবার দু’দিনই ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে কলকাতায়। তাই এ ক্ষেত্রে কোনও ঝুঁকি না নিয়ে পুর আধিকারিকদের তৈরি থাকার নির্দেশ দিয়েছেন পুর কমিশনার। ঘূর্ণিঝড়ের আভাস পাওয়ার পরেই পুরসভার শীর্ষ আধিকারিকদের যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে রাখতে বলেছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমও।
বাতিস্তম্ভগুলির হাল খতিয়ে দেখার কাজ শুরু হয়েছে। যাতে কোথাও বিদ্যুতের তার বেরিয়ে না থাকে। আর্থিং সব জায়গায় আছে কি না, সেই বিষয়গুলিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কারণ, দুর্যোগের আবহে শহরে যাতে তড়িদাহত হয়ে প্রাণহানির ঘটনা না ঘটে, তার জন্যই এই পদক্ষেপ। কোথাও গাছ পড়লে দ্রুত তা সরানোর ব্যবস্থা করার বন্দোবস্ত হচ্ছে বলেই জানিয়েছে পুরসভার একটি সূত্র।
প্রতিটি বোরো অফিসে থাকবে বিশেষ প্রতিনিধি দল। কোনও প্রয়োজন হলেই যাতে পুরসভার প্রতিনিধি পাঠিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা করা যায়, সে বিষয়ে তৈরি থাকতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাত হলে শহরের নানা প্রান্তে জল জমতে পারে। সেই আশঙ্কার কথা মাথায় রেখে নিকাশি বিভাগকে প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে পুরসভার কন্ট্রোল রুম। সব রকম প্রস্তুতি রাখা হয়েছে পাম্পিং স্টেশনগুলিতে। পুর এলাকার ৭৯টি নিকাশি পাম্পিং স্টেশন মিলিয়ে মোট ৪৫০টি পাম্প রয়েছে। সব পাম্পই ওই দুই দিন চালু রাখা হবে। সেই সঙ্গে থাকবে অস্থায়ী পাম্পও।
ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভেঙে পড়া গাছ সরাতে হাইড্রলিক ল্যাডার, ক্রেন, পে লোডার, ডাম্পারের ব্যবস্থা রাখা হচ্ছে। গাড়ি চলাচলের রাস্তা যাতে গাছ পড়ে দীর্ঘ ক্ষণ বন্ধ না থাকে, সে বিষয়ে বাড়তি নজর দিতে বলা হয়েছে অফিসারদের। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশের সাহায্য চাওয়া হতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
আরও একটি বিষয় ভাবাচ্ছে কলকাতা পুরসভাকে। আগামী সপ্তাহে কালীপুজো এবং দীপাবলি উৎসব। সেই কারণে শহরের বিভিন্ন প্রান্তে মণ্ডপসজ্জার সঙ্গে আলোকসজ্জাও করা হয়েছে। কিন্তু ঘূর্ণিঝড়ের দাপটে সে সব লন্ডভন্ড হয়ে গেলে তা ঠিক করতে যথেষ্ট বেগ পেতে হতে পারে কলকাতা পুরসভাকে। কারণ, দুর্যোগের দাপট কেমন হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়, তাই আগাম সতর্কতা হিসাবে একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে রাখছেন পুরসভা কর্তৃপক্ষ। এ ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের নির্দেশিকার ওপরেও নজর থাকবে পুরসভার শীর্ষকর্তাদের।