BRAKING NEWS

চট্টগ্রামের জেএম সেন হল দুর্গাপূজা মণ্ডপে সাংস্কৃতিক মঞ্চে ইসলামী গজল পরিবেশন, তোলপাড় দেশ থেকে বিদেশ

।। রাজীব দে ।।ঢাকা, ১১ অক্টোবর (হি.স.) : চট্টগ্রাম মহনগরীতে অবস্থিত জেএম সেন হল দুর্গাপূজা মণ্ডপের সাংস্কৃতিক মঞ্চে একদল শিল্পীর ইসলামী গজল পরিবেশনকে কেন্দ্র করে তোলপাড় বাংলাদেশ ও ভারত। নেট দুনিয়ায় উঠেছে প্রতিবাদ ও নানা মন্তব্যের ঝড়। এদিকে ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযোগে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানা গেছে।

ঘটনা বৃহস্পতিবার রাতের। মণ্ডপের সাংস্কৃতিক মঞ্চে আচমকা ছয়জনের এক দল উঠে সমবেত কণ্ঠে ইসলামী গজল গাইতে শুরু করেন। গজলের সংলাপে ইসলামকে বুঝতে এবং গ্রহণ করার আহ্বান ছিল। এদিকে মঞ্চের নীচে চেয়ারে উপবিষ্ট অসংখ্য হিন্দু পুরুষ-মহিলা বিরক্তির মধ্য দিয়ে তাদের গজল উপভোগ করেছেন। ৫১ সেকেন্ডের এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হতে সময় লাগেনি। সঙ্গে সঙ্গ ওঠে মন্তব্যের ঝড়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মঞ্চে ওঠে ইসলামিক গজল পরিবেশন করেছে চট্টগ্রাম কালচারাল অ্যাকাডেমি নামের একটি সংগঠনের শিল্পীরা। ঘটনার যথাযথ শাস্তি চেয়ে ইসলাম ধর্মাবলম্বী বহু নেটিজেন বলছেন, মুসলিম হিসেবে বিব্রতবোধ করছি আমরা। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা যে দলেরই হোক না-কেন, শাস্তি হওয়া উচিত তাদের সকলের।

এদিকে ঘটনার সঙ্গে শিবির সমর্থিত শিল্পীরা জড়িত বলে অনেকে দাবি করছেন। আবার অনেকে বলছেন, ভাইরাল ভিডিওটি ভয়েস এডিটিং করা হয়েছে।বৃহস্পতিবার রাতে সাকলাইন খুরশিদ প্রথমে ভিডিওটি শেয়ার করে লিখেছেন, ইফতার প্রোগ্রামে এসে কেউ যদি কীর্তন গেয়ে যান, তা-হলে নিতে পারবেন? অন্য ধর্মাবলম্বীদেরকে যে ট্রমার মধ্যে ফেলছি, সেটা তাদের জুতায় পা দিয়ে দেখেন।

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় নেতা আবু হানিফ লিখেছেন, একটা ভিডিও নজরে এসেছে, সেখানে দেখলাম পূজার মণ্ডপে গিয়ে ইসলামী বিপ্লবের গান গাচ্ছে কয়েকজন। যারা এই কাজ করেছেন এদের যথাযথ শাস্তি হওয়া উচিত, তারা যে দলেরই হোক না-কেন।

ভিডিওটি শেয়ার করে ছাত্রদলের প্রাক্তন নেতা মামুন খান লিখেছেন, চট্টগ্রামে জেএম সেন হল-এ সনাতন ধর্মীদের পূজা মণ্ডপে একটা গ্রুপ ইসলামী গান গেয়ে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে! আমি একজন মুসলিম হিসেবে বিব্রতবোধ করছি। অতিরিক্ত কোনও কিছুই ভালো নয়। আচ্ছা, মুসলমানের ঈদের নামাজ, ইফতার মেহফিল, জুমার নামাজ বা ওয়াজ মাহফিল ইত্যাদি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কীর্তন হলে সেটা কীভাবে নেবেন আপনারা?

গান গাওয়ার ঘটনার পর সেখানে হিন্দুদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হলে সেনা সহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাড়ানো হয়। পরে ডিসি ফরিদা খানম মণ্ডপে গিয়ে বক্তব্য পেশ করে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার ও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মামলা রুজু করার আশ্বাস দেন।

পূজা পরিষদের জনৈক সংগঠক বলেন, সন্ধ্যা সাতটার দিকে বংশী শিল্পী গোষ্ঠী নামের একটি সংগঠন গান পরিবেশনের পর চট্টগ্রাম কালচারাল অ্যাকাডেমি মঞ্চে ওঠে। মহানগর পূজা পরিষদের সভাপতি আশিস ভট্টাচার্য বলেন, “আমি ও কমিটির অন্য সদস্যরা মণ্ডপে ছিলাম না। চট্টগ্রাম কালচারাল অ্যাকাডেমির শিল্পীরা এসে যুগ্ম-সম্পাদক সজল দত্তের কাছে দেশাত্ববোধক সংগীত পরিবেশন করবেন বলে ইচ্ছা প্রকাশ করেন। দেশাত্ববোধক সংগীতের কথা বলায় সজল দত্ত তাদের গান গাওয়ার অনুমতি দিয়ে তারা স্টেজে ওঠে। কিন্তু তারা যে ইসলামী সংগীত পরিবেশন করবে তা ঘূণাক্ষরেও জানানো হয়নি।

এদিকে ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত থেকে জেএম সেন হল এবং বাইরে, মায় গোটা বাংলাদেশে সনাতনীদের মধ্যে উত্তেজনা ও চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *