BRAKING NEWS

হাইকোর্টে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন পেলেন ত্রিধারায় ধৃত ৯ প্রতিবাদী

কলকাতা, ১১ অক্টোবর (হি.স.): মহাষ্টমীতে হাইকোর্টে মহা-ধাক্কা খেল কলকাতা পুলিশ। দক্ষিণ কলকাতার নামী পুজো ‘ত্রিধারা সম্মিলনী’-র সামনে স্লোগান-কাণ্ডে ধৃত ৯ জন শর্তসাপেক্ষে অন্তর্বর্তিকালীন জামিন পেলেন।

‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দেওয়ায় তাঁদের গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ধৃত ৯ জনকে বৃহস্পতিবার পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছিল আলিপুর আদালত। শুক্রবার হাইকোর্টে ধৃতদের তরফে আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানতে চান, যে সব ধারা দেওয়া হয়েছে তা কি গ্রহণযোগ্য? আদালত তা বিবেচনা করুক। আইনের অপব্যবহার হলে এফআইআর খারিজ করা যায়। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য প্রশ্ন করেন, ‘‘ওঁদের অপরাধ কী? ওই প্রতিবাদ জানানো কি অপরাধ? পুলিশ কী ভাবে প্রতিবাদে হস্তক্ষেপ করে? হেফাজতে নিয়ে মামলা সাজাচ্ছে পুলিশ।”

রাজ্যের তরফে দাবি করা হয়, বৃহত্তর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। আন্দোলনকারীরা একে অপরের নাম ধরে ডাকছিলেন। তদন্ত চালিয়ে নিয়ে যেতে দেওয়া হোক। এই অবস্থায় হাই কোর্টের হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়।পুলিশের কাছে অভিযোগ করা হয়েছে। তার ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত করে গ্রেফতার করেছে। হোয়াট্‌স‌অ্যাপ গ্রুপ থেকে জানা গিয়েছে বড় চক্রান্তের কথা। আরও তদন্তের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সাত দিনের হেফাজতে পাঠিয়েছেন। প্রতিবাদকারীদের ফোন বাজেয়াপ্ত করে ফরেন্সিকে পাঠানোর প্রয়োজন রয়েছে। প্রতিবাদ করার অধিকার সবার রয়েছে। কিন্তু বড় জমায়েতে সমস্যা করে না।

বিচারপতি জানতে চান, এই বিট্টুকুমার ঝা কে? (যাঁর এফআইআরের ভিত্তিতে ন’জনকে গ্রেফতার করা হয়) রাজ্যের আইনজীবী সুমন সেনগুপ্ত বলেন, “স্থানীয় মানুষ”। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ওই ব্যক্তি কী ভাবে সবার নাম জানলেন? ওই মণ্ডপে কি প্রতিবাদ জানানো অপরাধ? রাজ্যের আইনজীবী বলেন, “তা নয়। পূর্ব পরিকল্পনামাফিক ওখানে যাওয়া হয়েছে। হোয়াট্‌সঅ্যাপ মেসেজ করেছে। শান্তি নষ্ট করার জন্য যাওয়া হয়েছে।”

বিচারপতি জানতে চান, ধৃতদের বয়ান কোন অফিসার রেকর্ড করেছেন? রাজ্যের আইনজীবী বলেন, তদন্তকারী অফিসার। থানার পুলিশ। আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ভাল জানবেন থানায় কেমন বন্দোবস্ত রয়েছে। তিনি কলকাতার মেয়র ছিলেন। বিচারপতি প্রশ্ন করেন, কেন লালাবাজারে নিয়ে গেলেন? সবাইকে কি গ্রেফতার করে ওখানে নিয়ে যান? রাজ্যের আইনজীবীর জবাব, লালাবাজারে সেন্ট্রাল লকআপ রয়েছে। থানায় এত জনকে রাখার ব্যবস্থা নেই।

বিচারপতি বলেন, অভিযুক্তদের কাছ থেকে শুধুমাত্র হোয়াট্‌সঅ্যাপ চ্যাট এবং প্ল্যাকার্ড উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁদের স্লোগান ঘৃণার নয়। ধর্মীয় ভাবে কাউকে আঘাত করেননি। অনেক সাধারণ মানুষ ওই স্লোগান দিচ্ছেন। ধৃতদের প্রত্যেকেরই কম বয়স। বেশির ভাগের বয়স ২০-২৫ বছর। অতি উৎসাহে তারা ওই কাজ করে থাকতে পারেন। আর জি করকে কেন্দ্র করেই ওই স্লোগান।

তবে এই সঙ্গে হাই কোর্ট ত্রিধারা-কাণ্ডে নির্দেশ দিয়েছে, আর কোনও পুজো মণ্ডপের ২০০ মিটারের মধ্যে প্রতিবাদ জানানো যাবে না। রাজ্য সরকারের কার্নিভালে ডিস্টার্ব করা যাবে না। ১ হাজার টাকা বন্ডে ধৃতদের জামিন দিয়েছেন বিচারপতি সরকার। আগামী ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত অন্তর্বর্তী রক্ষাকবচ বহাল থাকছে। তত দিন ধৃতদের প্রতি সপ্তাহে থানায় হাজিরা দিতে হবে। ধৃতেরা আর কোনও পুজো মণ্ডপে প্রতিবাদ জানাতে পারবেন না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *