নয়াদিল্লি, ৫ অক্টোবর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মহারাষ্ট্রের ওয়াসিম-এ প্রায় ২৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার কৃষি ও পশুপালন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের সূচনা করেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে পিএম- কিষাণ সম্মান নিধির ১৮তম কিস্তি বিতরণ, নমো শেতকারি মহাজন নিধি যোজনার পঞ্চম কিস্তির সূচনা, কৃষি পরিকাঠামো তহবিল (এআইএফ) ৯,২০০ কৃষক উৎপাদক সংস্থার আওতায় ৭,৫০০ টিরও বেশি প্রকল্প উৎসর্গ করা। এছাড়া মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশ জুড়ে গড়ে তোলার জন্য মোট ১৯ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন পাঁচটি সৌর পার্ক এবং গবাদি পশুর জন্য ইউনিফাইড জিনোমিক চিপ এবং লিঙ্গ অনুযায়ী বীর্য বিন্যাস করার দেশীয় প্রযুক্তি চালু করার প্রকল্প।
আজ প্রায় ৯.৫কোটি কৃষককে প্রায় ২০,০০০ কোটি টাকার পিএম-কিসান সম্মান নিধির ১৮তম কিস্তি বিতরণ করা হয়। এই প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্য সরকার কৃষকদের দ্বিগুণ সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করছে। শ্রী মোদী নমো শেতকারি মহাজন নিধি যোজনার কথাও উল্লেখ করেন, যেখানে মহারাষ্ট্রের প্রায় ৯০ লক্ষ কৃষককে প্রায় ১৯০০ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তিনি কৃষক উৎপাদক সংগঠনগুলির জন্য শত কোটি টাকার উপরে একাধিক প্রকল্প উৎসর্গ করার কথা উল্লেখ করেন।
দেশের কৃষকদের শক্তিশালী করার জন্য গৃহীত প্রধান পদক্ষেপগুলির উপর আলোকপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি পণ্যের সঞ্চয়, প্রক্রিয়াকরণ এবং পরিচালনার সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ৯২০০ টি কৃষক উৎপাদক সংস্থা (এফপিও)-র জন্য বিভিন্ন প্রকল্প সহ বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কৃষি পরিকাঠামো প্রকল্প উৎসর্গ করার মাধ্যমে ফলে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পাবে। মুখ্যমন্ত্রী শ্রী একনাথ শিণ্ডের সরকারের শূন্য বিদ্যুৎ বিল নীতির প্রশংসা করে শ্রী মোদী আরও বলেন, বর্তমান সরকারের অধীনে মহারাষ্ট্রে কৃষকরা দ্বিগুণ সুবিধা পাচ্ছেন।
মহারাষ্ট্র ও বিদর্ভের কৃষকদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত সরকারগুলি কৃষকদের দুর্দশাগ্রস্ত ও দরিদ্র করে তুলেছিল। তিনি এর সমালোচনা করে বলেন, মহারাষ্ট্রে যতদিন মহাজোট সরকার ক্ষমতায় ছিল, ততদিন মাত্র দুটি এজেন্ডা নিয়ে কাজ করেছে, অর্থাৎ কৃষকদের সঙ্গে সম্পর্কিত প্রকল্পগুলি বন্ধ করা এবং এই প্রকল্পগুলির অর্থের দুর্নীতি করা। শ্রী মোদী বলেন, কেন্দ্র থেকে যে অর্থ পাঠানো হয়েছে, তা সুবিধাভোগীদের কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের বর্তমান মহাযুতি সরকারের মতো, যাঁরা কৃষকদের কিষাণ সম্মান নিধির পাশাপাশি আলাদা অর্থ দিতেন, বিজেপি সরকারও কর্ণাটকে একই অর্থ দিত বলে জনগণকে মনে করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন নতুন সরকার ক্ষমতায় আসার সঙ্গে সঙ্গে তা বন্ধ হয়ে গেছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, তেলেঙ্গানার কৃষকরা আজ রাজ্য সরকারের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ঋণ মকুবের বিষয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় কৃষি ও কৃষক কল্যাণ এবং গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ২০,৪০০ কোটি টাকার কিষাণ সম্মান নিধি হস্তান্তর করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কৃষক বন্ধুত্বপূর্ণ এবং প্রতিটি মন্ত্রিসভায় কৃষকদের পক্ষে ধারাবাহিকভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। শ্রী চৌহান বলেন, শুধু কিষাণ সম্মান নিধিই নয়, ১০৯ টি উচ্চ ফলনশীল নতুন জাতের বীজ কৃষকদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী চৌহান বলেছেন, যখন সয়াবিনের দাম পরে গিয়েছিলো, তখন প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী কৃষকদের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং বিদেশ থেকে আসা সয়াবিন তেলের উপর ২০% আমদানি শুল্ক আরোপ করেছিলেন এবং ফলস্বরূপ, সয়াবিনের দাম এখন ক্রমাগত বাড়ছে এবং কৃষকরাও ভাল দাম পাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী রপ্তানি শুল্ক ৪০% থেকে কমিয়ে ২০% করেছেন যাতে মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ উৎপাদনকারী কৃষকরা আরও ভাল দাম পেতে পারেন। কৃষি উৎপাদন খরচের উপর যাতে ৫০% লাভ হয় এজন্য শ্রী মোদী ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা করেছেন। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে সয়াবিন কেনার অনুমতিও দেওয়া হয়।
শ্রী চৌহান বলেন, ৩৫ কেজি ইউরিয়া স্যারের ব্যাগের জন্য ২১০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার ফলে কৃষকদের কাছে তা বিক্রি করা হয় ২৬৬ টাকায়, যেখানে এর দাম ২৩৬৬ টাকা। ডিএপি-র ৫০ কেজি প্যাকেটে সরকার কৃষকদের ১০৮৩ টাকা ভর্তুকি দেয় এবং কৃষকদের কাছে ১৩৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়।