আগরতলা, ২৭ সেপ্টেম্বর: পর্যটনের প্রধান শর্তই হচ্ছে শান্তি। আর শান্তি না থাকলে পর্যটনের উন্নয়ন ও বিকাশ সম্ভব নয়। বিশ্ব পর্যটন দিবসে এবছরের ভাবনা হল ‘পর্যটন ও শান্তি’। এই বিষয়টি মাথায় রেখেই পর্যটন শিল্পকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া আহবান জানিয়েছেন রাজ্যপাল ইন্দ্র সেনা নাল্লু। আজ উজ্জয়ন্ত প্রসাদ প্রাঙ্গনে বিশ্ব পর্যটন দিবস উপলক্ষে পর্যটন নিগম আয়োজিত সাইকেল রেলি ও শান্তির শোভাযাত্রার আনুষ্ঠানিক সূচনা করে একথা বলেন তিনি। সাদা বেলুন উড়িয়ে এই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন রাজ্যপাল। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী ও পর্যটন নিগমের এমডি প্রশান্ত বাদল নেগী।
অনুষ্ঠানে রাজ্যপাল তাঁর ভাষণে বলেন পঞ্চাশ ষাট বছর আগে গ্রামে গ্রামে মেলা কে ঘিরে দূর দূরান্ত থেকে মানুষ আসতো। সময়ের সঙ্গে তার পরিবর্তন হয়েছে। মানুষ এখন ঘর থেকে বের হচ্ছেন নতুন নতুন জিনিস দেখা ও জানার জন্য। ওখানকার কৃষ্টি, সংস্কৃতি ,খাওয়া দাওয়া ,পোশাক পরিচ্ছদ, কৃষি কাজ বন্যপ্রাণী দেখা ও প্রতিপালনের বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিজেকে এর সঙ্গে যুক্ত করছেন। এভাবেই পর্যটন ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। পর্যটকদের থাকার জন্য হোটেলের ব্যবস্থা হচ্ছে। তাতে করে কর্মসংস্থান ও রোজগার বাড়ছে। এইভাবেই পর্যটন একটি শিল্পে পরিণত হয়েছে। তবে এই শিল্পের উন্নয়ন এবং বিকাশের জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরী শান্তি। ঘর, গ্রাম ও রাজ্য যদি শান্তি না থাকে তাহলে পর্যটনশিল্প ভেঙে পড়বে। এই প্রাসঙ্গে তিনি মনিপুরের বিষয়টিও তুলে ধরেন।
রাজ্যপাল বলেন, শান্তি থাকলে সেই রাজ্যের পর্যটন যেমন এগিয়ে যাবে সেই সঙ্গে মানুষের রোজগার ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও ত্বরান্বিত হবে। তিনি বলেন ত্রিপুরা বেশিরভাগ অংশই ট্যুরিজম স্পট। গোদাবরী নদীর চেয়ে গোমতী কোন অংশে কম নয়। রাজ্যের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে তার পরামর্শ ছোট ছোট গ্রামে ও ব্লক লেভেলে কুটির স্থাপন করা। মানুষ কাজের জন্য এসে যাতে এই সমস্ত স্হানে থাকতে পারেন। সেই সঙ্গে ইকো ট্যুরিজমেরও উন্নয়নের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। সংস্কৃতিতে একটি প্রবাদ রয়েছে অতিথি ভব। এই বিষয়টিকে মাথায় রেখে পর্যটকদের আত্মীয়তার ওপর জোর দিতে হবে। পরিশেষে তিনি বলেন নিজে জানুন, অন্যকে জানাতে সাহায্য করুন।
অনুষ্ঠানের পর্যটন মন্ত্রী সুশান্ত চৌধুরী বলেন, পর্যটন দিবস উপলক্ষে রাজ্যে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। তবে মূল অনুষ্ঠানটি হবে রবীন্দ্র ভবনে। তিনি বলেন রাজ্যে ভয়াবহ বন্যায় যারা শহীদ হয়েছে তাদের পরিবারের সঙ্গে দপ্তরে যুগসূত্র তৈরি করা প্রয়াস রেখেছে এবং যারা দুর্গতদের রক্ষার কাজে সাহায্য করেছেন তাদের এই অনুষ্ঠানে সংবর্ধিত করা হবে। এছাড়া ত্রিপুরায় পর্যটনের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর সৌরভ গাঙ্গুলী বন্যার ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যার্থে ১০ লক্ষ টাকা পাঠিয়েছেন। প্রত্যেক জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে ত্রাণ সামগ্রী হিসাবে তা পাঠানো হয়েছে। একইসঙ্গে তিনি পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন এবং বিকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা যে শান্তি এই বিষয়টিও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন টুর অপারেটর, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং বিভিন্ন পেশার মানুষ এই শান্তির শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। পতাকা নেড়ে এই শোভাযাত্রাটি সূচনা করেন রাজ্যপাল পর্যটন মন্ত্রী সহ অন্যান্য অতিথিরা। শ্বেত মহল থেকে শোভাযাত্রাটি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে।