কলকাতা, ২৫ সেপ্টেম্বর (হি.স.): “মা মাটি মিথ্যা/ তার নাম মমতা। কেন্দ্রীয় সরকারের নামে অপপ্রচার বন্ধ করুন। আপনাকে আর কেউ বিশ্বাস করে না। করবে ও না।”
বুধবার এই ভাষায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে একহাত নিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। সঙ্গে যুক্ত করে দিয়েছেন নবান্নর একটি চিঠি।
রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার পর থেকেই সরকারের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (ডিভিসি) রাজ্যকে না জানিয়ে বিপুল পরিমাণ জল ছাড়ার ফলে বানভাসি হয়েছে বাংলা। সেই অভিযোগ জানিয়ে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে দু’টি চিঠি পাঠিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা দফতরের একটি ‘মেমো’ অনুযায়ী, রাজ্য আগে থেকে জল ছাড়ার কথা জানত। গত ২০ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীকে প্রথম চিঠিটি লেখেন মমতা। ঘটনাপ্রবাহ বলছে, তার তিন দিন আগে ১৭ সেপ্টেম্বর রাজ্যে ‘বন্যা পরিস্থিতি’ তৈরি হতে পারে বলে আটটি জেলাকে সতর্ক করেছিল নবান্ন। ১৭ তারিখের মেমো বলছে, ওই দিন হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়ার জেলাশাসকদের মেমো পাঠায় রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর।
সেখানে এটা উল্লেখ করা ছিল যে, দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেশন কমিটি (ডিভিআরআরসি) এবং সিডব্লিউসি জানিয়েছে, আবহাওয়ার কারণে মাইথন ও পাঞ্চেত জলাধারে জলস্তর দ্রুত বাড়ছে। এই পরিস্থিতিতে ১৭ সেপ্টেম্বর থেকে ডিভিআরআরসি আড়াই লক্ষ কিউসেক জল ছাড়বে। তার ফলে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হলে তা মোকাবিলার যাবতীয় ব্যবস্থাও নিয়ে রাখতে বলা হয় ওই মেমোতে।
দিল্লিতে লেখা মুখ্যমন্ত্রীর চিঠির জবাবে কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়, রাজ্য এবং ডিভিসি-র প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত কমিটিই ঠিক করে, কখন কতটা জল ছাড়া হবে। ডিভিসি-র তরফেও জানানো হয়, বাংলার পাশাপাশি ‘দামোদর ভ্যালি রিজ়ার্ভার রেগুলেশন কমিটি’ (ডিভিআরআরসি)-তে ঝাড়খণ্ড সরকারেরও প্রতিনিধি রয়েছেন। ওই কমিটির সদস্য সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন (সিডব্লিউসি)-র প্রতিনিধি।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী ডিভিসি-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরই দামোদর ভ্যালি রিভার রেগুলেশন কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন রাজ্যের বিদ্যুৎ সচিব শান্তনু বসু, এবং রাজ্যের সেচ ও জলপথ দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ার।